জন্মভূমি রিপোর্ট : আগামী ৫ জুন ৪র্থ ধাপে খুলনার তিনটি উপজেলায় নির্বাচন সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে জেলা নির্বাচন কমিশন। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে রূপসা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় ত্রিমুখী এবং দাকোপ উপজেলায় চর্তুরমুখী লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই এ তিন উপজেলায় উত্তেজনা বাড়ছে।
রূপসা উপজেলা : এ উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৬ জন। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ৬জন প্রার্থী। তারা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ কামাল উদ্দিন বাদশা ( টেলিভিশন), সরদার ফেরদাউস আহমেদ (কাপ পিরিচ), এস এম হাবিব ( দোয়াত কলম), মোঃ কামরুজ্জামান (আনারস), নোমান ওসমানী রিচি (মোটর সাইকেল) এবং আব্দুল ওয়াদুদ মোড়ল (ঘোড়া) প্রতীক। তাদের মধ্যে মোঃ কামাল উদ্দিন বাদশা, সরদার ফেরদাউস আহমেদ এবং এস এম হাবিবের মধ্যে লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ কামাল উদ্দিন বাদশার নানা কারণে জনপ্রিয়তা কমেছে। তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে থাকলেও শীর্ষ নেতাদের সমর্থন পাচ্ছেন না। তবে প্রয়াত আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক হুইপ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার পরিবার তার পাশে রয়েছেন। আরেক প্রার্থী সরদার ফেরদাউস আহমেদকে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছেন জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা। ফলে তার অবস্থান এখন অনেক ভালো। স্থানীয় সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর স্ত্রীর সমর্থন নিয়ে ভোট যুদ্ধে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন আরেক প্রার্থী এস এম হাবিব। এছাড়া নোমান ওসমানী রিচি হলেন সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদীর আপন চাচাতো ভাই। তবে তিনি প্রতিদ্বন্দিতায় আসছেন না। এ উপজেলায় তিন প্রার্থীর মধ্যে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে বলে ভোটারদেও সাথে কথা বলে জানাগেছে। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে পুরুষ ৩ জন এবং মহিলা ২জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
বটিয়াঘাটা উপজেলা: এ উপজেলায় ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৮০৬ জন। চেয়ারম্যান প্রার্থী ৬ জন। ভাইস চেয়ারম্যান পূরুষ ৫ জন এবং মহিলা ৩ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে শ্রীমান্ত অধিকারী রাহুল (টেলিভিশন), জিএম মিলন (চিংড়ি মাছ), মোতাহার হোসেন শিমু (ঘোড়া), নিতাই গাইন (দোয়াত কলম), শেখ রাসেল কবির (মোটর সাইকেল) এবং মোঃ শাওন হাওলাদার (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়াই করছেন। তবে এখানে ত্রিমুখী লড়াই হওয়ার আভাস পাওয়া গেছে। শ্রীমান্ত অধিকারী রাহুল, জিএম মিলন এবং মোতাহার হোসেন শিমুর মধ্যে জয় পরাজয়ের হিসাব নিকাশ চলছে। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ উপজেলায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও প্রার্থীদেও সমর্থকদেও মধ্যে হাতাহাতি, মারামারির খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত শুক্রবার দুই প্রার্থীও সমর্থকদের মধ্যে মারামারিতে উভয় পক্ষের ৮ জন আহত হয়। মোতাহার হোসেন শিমু স্থানীয় সংসদ সদস্য ননী গোপালের সমর্থন নিয়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন।
দাকোপ উপজেলা : এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪ জন এবং ভাইস চেযারম্যান পদে পুরুষ ৭ এবং মহিলা ৫ জন প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৮৩ জন। এ উপজেলায় চেযারম্যান পদে চার প্রার্থীই সমানভাবে এগিয়ে আছেন। একানে জয়-পরাজয় সামান্য ভোটের ব্যবধানে হবে বলে ভোটারদের ধারণা। চেয়ারম্যান পদে সাবেক পৌর মেয়র অধ্যক্ষ ড. অচ্যিন্ত কুমার মন্ডল দোয়াত কলম), সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আবুল হোসেন ঘোড়া), মোঃ সাইফুল ইসলাম (চিংড়ি মাছ) এবং শেখ যুবরাজ (আনারস) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে স্থানীয় সংসদ সদস্য ননী গোপাল মন্ডলের আর্শিবাদ রয়েছে মোঃ সাইফুল ইসলামের উপর। এ কারণে তিনি বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন।
এদিকে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ টি এম শামীম মাহমুদ জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনের আগের দিন সকল সরঞ্জামাদি ভোট কেন্দ্রে পৌছুবে। আর ভোটের দিন ভোরে ব্যালট পেপার স্ব স্ব কেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে।
উপজেলা নির্বাচন: রূপসা-বটিয়াঘাটায় ত্রিমুখী ও দাকোপে চর্তুরমুখী লড়াই
Leave a comment