জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলব, যে কয়টা ঘর, ৩০০ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রত্যেকটার তদন্ত তাদের করতে হবে। তাদের রিপোর্ট দিতে হবে। এটাই আমার কথা। তাদের রিপোর্ট দিতে হবে।’
দেশের গৃহহীন মানুষদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মাণ করা উপহারের ঘরগুলোর মধ্যে অন্তত ৩০০টি কে বা কারা ভেঙে ফেলেছে জানিয়ে তা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে বলব, যে কয়টা ঘর, ৩০০ ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রত্যেকটার তদন্ত তাদের করতে হবে। তাদের রিপোর্ট দিতে হবে। এটাই আমার কথা। তাদের রিপোর্ট দিতে হবে।’
উপহারের ঘর নিয়ে কোনো দুর্নীতি সহ্য করা হবে না জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, ‘অবশ্যই এখানে দুর্নীতি করলে আমি সেই দুর্নীতি মানতে রাজি নই। গরিবকে ঘর করে দেবো, সেখান থেকেও টাকা মেরে খাবে?’
সংসদ অধিবেশনে একজন সংসদ সদস্যের বক্তব্যে জানান, দুদকের একজন কর্মকর্তা তাকে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের কারণে তারা উপহারের ঘরের অনিয়ম নিয়ে তদন্ত করতে পারছেন না।
তার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো কর্মকর্তার তো এই কথা বলার কথা না। এই কথা যে কর্মকর্তা বলেছে, যদি আমি জানতে পারি, তো তার ব্যাপারেও একটু খোঁজ নিতে হবে।’
ইতোম্যধ্যে এ নাশকতাকারীদের খোঁজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্তে নেমেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরো তদন্তের পর গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরপর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কেন তদন্ত বন্ধ করে দিল – সে প্রশ্ন তুলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন, তদন্ত বন্ধ করবে কেন? সেখানে আমার প্রশ্ন। তাদের তো তদন্ত বন্ধ করার কথা না। তাদেরকে তদন্ত চালু রাখতে হবে। তদন্ত করে দেখতে হবে, যারা ভাঙল তারা কারা? তাদের উদ্দেশ্যটা কী ছিল? তারা কেন ভাঙল? দুর্নীতি দমন কমিশন যদি তদন্ত করে থাকে, করতেই হবে।’
আগামীতে উপহারের ঘর নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল নেয়ার কথাও জানান সরকারপ্রধান। বলেন, ‘আমরা এখন ঠিক করেছি কংক্রিটের পিলার ও স্টিলের ফ্রেম দিয়ে ঘর করে দেবো, যাতে চট করে ভাঙতে না পারে।’
উপহারের ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নিয়ে বিশদ বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাা। তিনি বলেন, ‘আমরা তদন্ত করেছি। দেখা গেছে ৯টি জায়গায় আমরা দুর্নীতি পেয়েছি। ১০/১২ জায়গায় যেখানে অতিবৃষ্টি হলো, সেখানে বৃষ্টির কারণে মাটি ধসে ঘর পড়ে গেছে। সেখানে কিন্তু আরও অনেক ঘর ছিল।’
তবে ৩০০টি স্থানে পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল বলে সংসদকে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আর ৩০০টি জায়গায়, যেখানে প্রত্যেকটি ঘরের ছবি আমার কাছে আছে, পুরো তদন্ত করে দেখা গেছে সেখানে দরজা-জানালার ওপর হাতুড়ির আঘাত। ফ্লোরগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ভাঙা। প্রশ্ন উঠবে জানলে ছবিটা নিয়ে আসতাম। আগামীতে ছবি দেখাব।
‘ইটের গাঁথুনি, পিলার সেগুলো ভেঙে ফেলে দেয়া হয়েছে। এটা তো দুর্নীতির জন্য হয়নি। এটা কারা করল? তবে হ্যাঁ, কারা করেছে তদন্ত হচ্ছে। এর মধ্যে কিছু অ্যারেস্টও হয়েছে। তাদের অ্যারেস্ট করা হবে, ব্যবস্থা নেয়া হবে।