
বাগেরহাট অফিস : যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে আবারও বন্ধ হয়ে গেছে বাগেরহাটের রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। গত শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে উৎপাদন শুরুর পর থেকে গত আট মাসে ৭ বার বন্ধ হলো কেন্দ্রটি। তবে বিষয়টি নিয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোন দায়িত্বশীল ব্যাক্তি কথা বলতে রাজি না হলেও নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ছাই নির্গমন প্রক্রিয়ার ত্রুটির কারনে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। উৎপাদন শুরুর পর প্রথম ১৪ জানুয়ারি, এরপর ১৫ এপ্রিল, ২৩ এপ্রিল, ৩০ জুন, ১৬ জুলাই, ৩০ জুলাই ও সর্বশেষ ১৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। এর আগে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানান, এবার কয়লা সংকট নয়, যান্ত্রিক ত্রুটি (বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ছাই নির্গমন প্রক্রিয়ার ত্রুটির) কারণে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে টারবাইন (বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের ঘূর্ণায়মান যন্ত্র) ত্রুটির কারণে গত ১৬ জুলাই বন্ধ হয়ে যায় রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। টারবাইন মেরামত শেষে ২০ জুলাই দুপুর থেকে উৎপাদন শুরু হয়।
একটি সূত্রে জানাযায়, কয়লা সংকটের কারণে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারী, ২৩ এপ্রিল ও ৩০ জুলাই রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমবার কয়লা সরবরাহ স্বাভাবিক না হওয়ায় প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল কেন্দ্রটি। দ্বিতীয় দফা কয়লা সংকটে কেন্দ্রটি দুই সপ্তাহ বন্ধ ছিল। আর তৃতীয় দফা বন্ধ ছিল প্রায় ১৬ দিন। এর বাইরে কয়লা সংকটে বিভিন্ন সময়ে আংশিক উৎপাদন চলে কেন্দ্রটিতে। এছাড়া গত ১৫ এপ্রিল রাত থেকে তিন দিন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ থাকে এই কেন্দ্রটির উৎপাদন।
অপরদিকে, গত ৩০ জুন কেন্দ্রটি দ্বিতীয় দফা বন্ধ হয় কারিগরি ত্রুটির কারণে। সেবার চালু হতে ১০ দিনের বেশি সময় লাগে। যদিও চালু হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ১৬ জুলাই আবার কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হয় কেন্দ্রটি। সেসময় প্রায় এক সপ্তাহ বন্ধ ছিল কেন্দ্রটি। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে আবারও কারিগরি ত্রুটিতে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি।
এদিকে, বারবার কারিগরি ত্রুটিতে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হওয়াকে মোটেও স্বাভাবিক মনে করছেন না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কর্মকর্তারা। তাদের মধ্যে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটির যন্ত্রপাতিতে কিছু সমস্যা রয়েছে। এগুলো ঠিকমতো কাজ করছে না। তবে দ্বিতীয় ইউনিটটি নির্মাণের সময় এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ইউনিটটি চালুর পর প্রথম ইউনিটটি পুরোপুরি বন্ধ (শাটডাউন) করে এগুলো সমাধান করা হবে। এরপর প্রথম ইউনিট থেকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।