মকবুল হোসেন মিন্টু
তালুকদার আব্দুল খালেক- আমাদের খালেক ভাই। একজন সৎ, কর্মঠ, নিষ্ঠাবান ও পরিশ্রমী মানুষ। তৃণমূল থেকে ধাপে ধাপে উঠে আসা ত্যাগী রাজনীতিক। মেয়র হিসেবে সফল খুলনার মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তি। খুলনাকে আধুনিক ও পরিকল্পিত বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
খুলনার বিভিন্ন দাবি আদায় ও আন্দোলনে সবসময় প্রথমসারির নেতা হিসেবে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। একাধিকবার ওয়ার্ড কএিখনার ও কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে তিনি নগরীর মুন্সিপাড়া ও সংলগ্ন এলাকায় তার রাজনীতির ভিত্তি রচনা করে সকলের কাছের মানুষে পরিণত হন। ছাত্রাবস্থায় প্রথমবারের মতো তৎকালীন খুলনা পৌরসভার মহসিনাবাদ ইউনিয়নের কএিখনার নির্বাচিত হয়েছিলেন।
স্বাধীনতার আগে ও পরে পর্যায়ক্রমে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তর পার করে তিনি একজন সফল রাজনীতিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত আছেন। দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হয়ে খুলনাবাসীর জন্য সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করে চলেছেন।
জাতীয় সংসদের বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) থেকে বেশ কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। তাঁর যোগ্যতা মূল্যায়ন করে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে মন্ত্রীসভায় স্থান দিয়েছিলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি অত্যন্ত সফলতা ও সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সে সময়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা-দুর্যোগ ও উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা সামাল দিয়েছেন দক্ষতার সাথে। শেখ হাসিনার নির্দেশে দুর্গত এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। দুর্যোগকালীন সময়ে তাঁর ভূমিকা দেশব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
সুখে-দু:খে যে কোন বিপর্যয়, সংকট, সমস্যা, বিপদে-আপদে তিনি মানুষের কাছে ছুটে যান তিনি- সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। করোনা ভাইরাসজনিত কঠিন বিপযর্য়ে বিগত দেড় বছর যাবৎ তিনি খুলনার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। সরকারি ও নিজ উদ্যোগে সম্ভব সবরকম সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন।
সম্প্রতি শারীরিক অসুস্থতা ও চিকিৎসাজনিত কারণে ঢাকায় অবস্থান করলেও তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের সকল কার্যক্রমে যোগাযোগ রেখেছেন। উন্নয়নমূলক কার্যক্রম যেন ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশনের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম তিনি সরেজমিন তদারক করেন। যাতে কাজে কোন গাফিলতি না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করেন। ব্যত্যয় হলে কোন ছাড় দেন না। কেসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তিনি সর্বদা সততা ও আন্তরিকতার সাথে কাজ করার উপদেশ দেন।
জননেত্রী শেখ হসিনা তাঁর ওপর অতিমাত্রায় আস্থাশীল বলেই খুলনার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁকে সংসদ সদস্য থেকে পদত্যাগ করিয়ে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি শেখ হাসিনা ও দলের মুখ উজ্জ্বল করেছেন। দ্বিতীয়বারের মত মেয়র নির্বাচিত হয়ে তিনি এ অঞ্চলের আওয়ামী লীগের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন। তাই, দায়িত্ব গ্রহণের আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনা সিটি করপোরেশনকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলেন।
দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সচেষ্ট হন। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁর দেয়া প্রতিশ্রুতি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
তিনি একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। খুলনা-২ আসনের সংসদ সেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের সহযোগিতায় খুলনার উন্নয়নে অবদান রাখছেন এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার অগ্রযাত্রাকে তরান্বিত করছেন। এ জন্য খুলনাবাসী তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে খুলনা মহানগরীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ, নাগরীর সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেসিসির জনবল বৃদ্ধি, নগরসংলগ্ন ২২টি খাল খনন ও খালগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কেসিসি’তে পৃথক শাখা সৃষ্টি, জ্ঞান চর্চা, প্রকল্পের সম্ভাবতা যাচাই ও প্রকল্পের প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেসিসি ও খুলনা বিশ^^বিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদানের পাশাপাশি কেসিসি’র সকল ওয়ার্ড কার্যালয়ে প্রিন্টার ও স্ক্যানারসহ নতুন কম্পিউটার প্রদান, মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার, রাস্তার উপর থেকে অবৈধ বাজার ও দোকানপাট উচ্ছেদে পদক্ষপ গ্রহণ বর্তমানে কেসিসি’র অগ্রাধিকারভিত্তিক কার্যক্রমের অংশ। পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত নগরী হিসেবে নগরজুড়ে সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা, সড়ক উন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নে সম্প্রতি কেসিসি থেকে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
আশার কথা ‘বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা’ প্রাথমিক পর্যায়ে বিশে^র ৫টি শহরকে ‘হেলদি সিটি’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে- যার মধ্যে খুলনা মহানগরীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুন্দর ও স্বাস্থ্যসম্মত নগরী হিসেবে খুলনাকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে পর্যায়ক্রমে খেলার মাঠ, পায়ে চলার স্বাচ্ছন্দ রাস্তা তৈরি এবং শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণে পরিকল্পণা নেয়া হয়েছে।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, একজন স্পষ্টবাদী, ত্যাগী, পরীক্ষিত, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও জননেতা হিসেবে খুলনার উন্নয়ন ও খুলনার মানুষের জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। খুলনার মানুুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল নির্দেশনা ও দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন এই জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ। মেয়র হিসেবে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব গ্রহণের তৃতীয় বছর পূর্তির এই দিনে জননেতা তালুকদার আব্দুল খালেকের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সর্বাঙ্গীন মঙ্গল ও উন্নতি কামনা করছি।
একজন কর্মঠ ও অনুকরণীয় ব্যক্তি জননেতা তালুকদার আব্দুল খালেক
Leave a comment