
২৪ ঘন্টায় বাগেরহাটে ১৬৫ মি. মি. বৃষ্টিপাত
বাগেরহাট অফিস : এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাটের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত, এক কথায় পুরো জেলায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। গেল ২৪ ঘন্টায় ১৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে মোংলা আবহওয়া অফিস। যা রবিবারের থেকে ৮৯ মিলিমিটার বেশি। অবিরাম বৃষ্টিতে চরম বিপাকে পড়েছেন খেটে খাটা খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষেরা। জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছেন ৭ হাজার ৫১০টি পরিবার। ১ হাজার ৫৮০টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে বাগেরহাট পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের মিঠাপুকুরপাড়, খানজাহান আলী সড়ক, শালতলার মোড়, সাধণার মোড়, রাহাতের মোড়, মাছবাজার, কাঁচাবাজার, চালপট্টী, পুরাতন বাজার মোড়, বাসাবাটি, সাহাপাড়া, খানজাহান পল্লী-গোবরদিয়া, খারদ্বার, ভূমি অফিস মোড়সহ বাগেরহাট পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
শুধু বাগেরহাট পৌরসভা নয়, টানা বৃষ্টিতে মোংলা ও মোরেলগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক, বাজার এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তি পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
এদিকে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও কচুয়ার বেশকিছু এলাকায় মৎস্যঘের ডুবে মাছ বের হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মৎস্য চাষীরা নেট ও পাটা দিয়ে মাছ রক্ষার চেষ্টা করছেন। বৃষ্টি দু-একদিন স্থায়ী হলে এসব এলাকার বেশিরভাগ ঘের ডুবে যাবে বলে দাবি মাছ চাষীদের।
শহরের রিকশা চালক রবিউল ইসলাম বলেন, সাতদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার পরেও,বাধ্য হয়ে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। লোকজন নেই, তারপরও দুই চারজন যা পাচ্ছি এই দিয়েই আজকের বাজার করতে হবে।
বৃষ্টির পানিতে রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়া ও জলাবদ্ধতার কারণ হিসেবে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বলেন, ড্রেনগুলো বন্ধ থাকার কারণে সহজেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ড্রেনগুলোতে অবৈধভাবে দোকান পাট দিয়ে বসেছে। সরকারের উচিত ড্রেনগুলোকে দখলমুক্ত করা। পৌরসভার পক্ষ থেকে ড্রেনগুলো পরিস্কার করলে, জলাবদ্ধতা কম হবে বলে মনে করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, পূর্নিমার জোয়ারের প্রভাব কেটে যাওয়ায় নদ-নদীর পানি কিছুটা কমেছে। কোন নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে না। তবে বৃষ্টির পানি সাধারণ মানুষকে খুব ভোগাচ্ছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজ আল আসাদ বলেন, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ভারি বৃষ্টিতে জেলার ৭ হাজার ৫১০টি পরিবার জলবদ্ধতার শিকার হয়েছেন। ১ হাজার ৫৮০টি মাছের ঘের প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও অসহায় মানুষদের খোজ খবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।