
ঢাকার যোগাযোগে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে চাচ্ছে। শনিবার বিকালে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আপাতত এ সড়কের বিমানবন্দরের দিক থেকে ওঠা গাড়ি নামবে ফার্মগেটের ইন্দিরা রোড দিয়ে। আর ফার্মগেট প্রান্ত থেকে গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে বিজয় সরণি ফ্লাইওভার দিয়ে। আশা করা হচ্ছে, ঢাকা মহানগরীর জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে। রাজধানীর যানজট নিরসনে অনেক বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে মেট্রোরেলের মতো প্রকল্পের সুবিধা পেতে শুরু করেছে নগরবাসী। নগরবাসীর নিত্যদিনের ভোগান্তি কমিয়ে আনা এবং সময় বাঁচাতে সরকার ঢাকাকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ নেয়। ঢাকা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে নির্বিঘ্ন ও দ্রুত সড়ক যোগাযোগ চালু করতে ২০০৯ সালে নেয়া হয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। নির্মাণ চুক্তি হয় ২০১১ সালে। কথা ছিল ২০১৩ সালের মধ্যে এক্সপ্রেসওয়েটি উদ্বোধন হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১০ বছর পর চালু হচ্ছে আংশিকভাবে। প্রকল্পের শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকায়। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলবে ৬০ কিলোমিটার গতিতে। এই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের রোড কানেকটিভিটি মোট সাড়ে ২২ কিলোমিটার। এর মধ্যে সাড়ে ১১ কিলোমিটার মেইন ক্যারেজ, অর্থাৎ উড়াল সড়ক। এর সঙ্গে গাড়ি ওঠা-নামার র্যাম্প থাকছে ১১ কিলোমিটার। সময় সাশ্রয় ও বাধাবিহীন যাতায়াতে সড়কটি বড় ভূমিকা রাখবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ২০২৪ এর জুন পর্যন্ত ধরা আছে। তখন চালু হবে পুরো সড়কটি। প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। বলা হচ্ছে, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার যোগাযোগব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে মোট জিডিপির ৩৭ শতাংশ জোগান দিচ্ছে ঢাকা। যানজটের কারণে দেশের প্রধান প্রধান শহরে নগরায়ণের অনেক অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে রাজধানীতে বসবাসকারী নাগরিকদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় আনবে আমূল পরিবর্তন। মানুষের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে রাখবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।