জন্মভূমি ডেস্ক : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোটভাই শাহাদাত হোসেনসহ (টেলিফোন) দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। অপর প্রার্থী হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল (দোয়াত-কলম)।
বুধবার (২৯ মে) দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভোট ডাকাতি, কেন্দ্র দখল, জাল ভোটসহ এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তারা।
দুই প্রার্থীর অভিযোগ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার ছেলে তাশিক মির্জা কাদের ও ভাগিনারা কেন্দ্র দখলে নিয়ে ব্যালটে সিল মারছেন।
মেয়র আবদুল কাদের মির্জাও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যবসায়ী গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুলকে (আনারস) সমর্থন দিয়ে ভাইসহ অন্যদের বিরোধিতা করে আসছেন। প্রশাসনকে জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভোটের পূর্ব রাতে মোটরসাইকেল বাহিনী বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা, হুমকি, ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভোটররা যেন কেন্দ্রে না আসে সে জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহাদাত হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পুনরায় তফসিল ও নির্বাচন দাবি করে বলেন, প্রার্থী হয়ে আমি নিজেও ভোট দিতে পারিনি। মেয়র কাদের মির্জা ও তার ছেলে তাশিক মির্জা আমাকে ভোট দিতে দেয়নি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান বাদল অভিযোগ করে বলেন, ভোটের আগেও এখানে ভোটের পরিবেশ ছিল না, ভোটারদের কাছে যেতে পারিনি। স্বাধীনভাবে ভোটারদের কাছে কোনো মতামত প্রকাশ করতে পারিনি। এসব বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে বেশ কয়েকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। আজ আনারস প্রতীক ব্যতীত অপর প্রার্থীদের প্রতীকে ভোট দিতে দিচ্ছে না।
অভিযোগ অস্বীকার করেন আবদুল কাদের মির্জা ও তাশিক মির্জা কাদের। তারা সাংবাদিকদের বলেন, যারা ভোটারশূন্য তারা এখন অভিযোগ করছে। দোয়াত-কলমের প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা চর এলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের বড় ভাই আবদুল আজিজকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। এখন তারাই মিথ্যা অভিযোগ করছে। এসব সত্য নয়। আপনারা সরেজমিনে দেখে বিস্তারিত জানান। মানুষ যার যার ভোট তারা তারা দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের তৃতীয় ধাপে নোয়াখালীর সদর, বেগমগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় চলছে ভোটগ্রহণ। বুধবার (২৯ মে) সকাল ৮টায় তিনটি উপজেলার ৩৭ টি ইউনিয়নের ৩৫৭টি কেন্দ্রে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। তিনটি উপজেলায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে ১২ লাখ ৭ হাজার ৫৮২ জন। এদিকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। এতে উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়ছেন।