জন্মভূমি ডেস্ক : রাশিয়ার ভাড়াটে সেনা সংগঠন ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রুশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। ইতিমধ্যে তারা সেনা সদর দপ্তর দখলের কথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে আজ শনিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক টেলিভিশন ভাষণে বলেছেন, ‘ওয়াগনারের বিশ্বাসঘাতকতা দেশ ও জনগণের পিঠে ছুরিকাঘাত।’
পুতিন ওয়াগনারের কর্মকাণ্ডকে অভ্যন্তরীণ বিশ্বাসঘাতকতা বলে অভিহিত করেছেন। ওয়াগনার সেনাদের কথা উল্লেখ না করেই তিনি বলেন, কিছু রাশিয়ানকে কৌশলে অপরাধমূলক দুঃসাহসিক কাজের দিকে ধাবিত করা হচ্ছে।
পুতিন বলেন, ‘যারা রাশিয়াকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে, তাদের শাস্তি পেতে হবে। তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। রাজধানী মস্কো এবং অন্যান্য কয়েকটি অঞ্চলে এখন সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চলছে। আমরা আমাদের উভয় জনগণকে রক্ষা করব।’
রোস্তভে বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের কাজ মূলত অবরুদ্ধ বলে জানিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ঐক্য, একত্রীকরণ ও দায়িত্ব প্রয়োজন।’
এর আগে প্রিগোজিনকে ক্রেমলিন ‘অস্ত্রধারী বিদ্রোহী’ বলে অভিযুক্ত করার কয়েক ঘণ্টা পরেই তিনি বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। প্রিগোজিন বলেন, ‘রুশ বাহিনী আমাদের বিভিন্ন সেনাশিবিরের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এসব হামলায় আমাদের অনেক সহযোদ্ধা সেনাসদস্যের মৃত্যুও হয়েছে। এ কারণে পিএমসি ওয়াগনারের সর্বোচ্চ নির্বাহী ফোরাম কমান্ডার্স কাউন্সিল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, সামরিক নেতৃত্বের হাত থেকে রাশিয়াকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।’
ইয়েভজেনি প্রিগোজিন আরও বলেছেন, ওয়াগনার যোদ্ধারা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার সীমান্ত পেরিয়ে রোস্তভ শহরে প্রবেশ করেছে। তাঁদের সামনে যে-ই আসুক না কেন, সে মারা পড়বে। এ অবস্থায় স্থানীয় গভর্নর সেখানকার নাগরিকদের শান্ত এবং বাড়ির ভেতরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রিগোজিনের দাবি, তাঁর বাহিনী একটি রুশ সামরিক হেলিকপ্টারকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যা বেসামরিক কাফেলার ওপর গুলি চালিয়েছিল। তবে কোন স্থানে এ ঘটনা ঘটেছে তার বর্ণনা দেননি, ফলে তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ভাড়াটে সৈন্যদের গ্রুপ ওয়াগনার ইউক্রেনে রুশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সম্প্রতি প্রিগোজিন রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা শুরু করেছে।
এরপর গতকাল শুক্রবার ৬২ বছর বয়সী ভাড়াটে নেতা তাঁর সৈন্যদের ওপর একটি মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর জন্য সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন এবং তাদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি প্রমাণ দেননি। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ ধর্মঘট অস্বীকার করেছে এবং ‘বেআইনি কর্ম’ বন্ধের দাবি জানিয়েছে।
প্রিগোজিন বলেছেন, ‘এটি সামরিক অভ্যুত্থান নয়, বরং রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বে ‘শয়তানি’ বন্ধ এবং ন্যায়বিচারের মিছিল। আমাদের কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সেনাদের ওপর হস্তক্ষেপ করে না।’