
এম সাইফুল ইসলাম : নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। একই সাথে আরও উন্নয়ন কাজ চলমান। যা ধীরে ধীরে মডেল ওয়ার্ডের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দাবি বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ আরিফ হোসেন মিঠুর। অন্যদিকে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা বলছেন, মাদক, কিশোর গ্যাং, ভূমিদস্যুর আধিপত্য রয়েছে এই ওয়ার্ডে।
এই ওয়ার্ডের জনসংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি এবং ভোটার সংখ্যা ৩০ হাজার দুইশ’ ৭৭। এই ওয়ার্ডটি রূপসা নদী, বটিয়াঘাটা উপজেলা এবং ক্ষেত্রখালির খাল দ্বারা পরিবেষ্টিত।
নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ আরিফ হোসেন মিঠু বলেন, আমি ২০১৮ সালে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডকে মেয়রের সহযোগিতায় একটি মডেল ওয়ার্ড করার জন্য ব্যাপক উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া ওয়ার্ডে সাধারণের জন্য রাস্তঘাট ড্রেন নির্মাণ করেছি। এলাকায় নতুন নতুন রাস্তা এবং বাড়িঘর নির্মাণ হওয়ায় বিদ্যুৎ এর পোলসহ সংযোগের ব্যবস্থা করেছি এবং বিভিন্ন প্রকল্প হতে সৌর বিদ্যুৎ স্থাপন করেছি। কেসিসি’র সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে সড়কবাতির ব্যবস্থায় করেছি।
ক্ষেত্রখালি, ছড়িছড়া খালের পূর্ব পাড়ের রাস্তা নির্মাণ করেছি। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছি। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছি এবং উন্নয়নের জন্য অনুদান প্রদান করেছি। ওয়ার্ডের দুইটি খ্রিস্টান কলোনীতে বিশেষ বিশেষ দিনে আলোকসজ্জা ও খাবারের ব্যবস্থা এবং নতুন পোশাক বিতরণ করে আসছি। এলাকার রাস্তা ড্রেন পরিষ্কার এবং মশক নিধনের কাজ দেখভাল করি। নিজ অর্থায়নে স্প্রে মেশিন ক্রয় করে এবং টিম গঠন করে মশক নিধনের কাজ তদারকি করি। মেয়রের সহায়তায় করোনাকালীন সময় জনগুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী স্থাপন করেছি এবং বিতরণ করেছি। জরুরি মুহূর্তে এলাকাবাসীর জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করেছি। জরুরি মুহূর্তে রোগী বা লাশ পরিবহণে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দেখে নিজস্ব অর্থায়নে ‘মুক্তা অ্যাম্বুলেন্স’ নামে একটি ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করেছি। নিজস্ব অর্থায়নে ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে আগত শিশুদের বিনোদনের জন্য খেলাধুলার বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে শিশু কর্নার স্থাপন করেছি। ওয়ার্ড অফিসে আগত মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার করেছি। রূপসা ব্রিজ রোড হতে রূপসা ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত ৪ চার লেনের একটি দর্শনীয় সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। জনসাধারণের সুবিধার্থে দুইটি স্লুইসগেট দিয়ে পানি ওঠানামার কাজ নিজে তদারকি করি। প্রশাসনের মাধ্যমে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মাদক নির্মূলে আমি বদ্ধপরিকর।
ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল জানান, ওয়ার্ডের উন্নয়ন হচ্ছে। তবে সেটি ধীর গতি। উন্নয়নে পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে। নির্মাণ কাজে ধীর গতির কারণে জনভোগান্তি বেড়ে গেছে। বছরের পর বছর জনগণ ভোগান্তিতে রয়েছে। বৃষ্টিতে সেই দুর্ভোগ আরও বাড়ে। ওয়ার্ডের পরিবেশগত বিষয়ে ব্যাপক অবনতি পরিলক্ষিত। মাদক, কিশোর গ্যাং বৃদ্ধি পেয়েছে। কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে মানুষ কথা বলতে পারছে না। মেধাবী কোনো নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। এটি শ্রমিক এলাকা। শ্রমজীবী মানুষ এখানে বেশি। আগামী দিনে যারা কর্ণধার তারা বিপথে যাচ্ছে। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়টিকে আমালে আনতে হবে। তবে আমি সুষ্ঠু ও নির্বাচন হবে কি না শঙ্কায় রয়েছি। আমি নির্বাচিত হলে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে ভূমিকা রাখব।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার জানান, উন্নয়ন হচ্ছে। আমি জয়লাভ করলে সন্ত্রাস দমন, মাদক নির্মূল, ভূমিদস্যু প্রতিহত করব। এলাকায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করব। ওয়ার্ডে কোনো খেলার মাঠ নেই। সেজন্য খেলার মাঠের ব্যবস্থা করব। কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করব। জনসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিব। আমি ওয়ার্ডের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয়প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছি এবং করছি।