এম সাইফুল ইসলাম : আসন্ন কেসিসি নির্বাচনে নগরীর ১৮ নং ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাদক-সন্ত্রাসমুক্ত, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি আদর্শ ওয়ার্ড গঠনে ভূমিকা রাখতে চায়। এ ওয়ার্ডে প্রার্থীর সংখ্যা মোট আটজন। যার মধ্যে আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী থাকলেও বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি নেতা হাফিজুর রহমান মনি দলীয় সিদ্ধান্তে নির্বাচন থেকে সরে আসেন।
জানা যায়, নগরীর ১৮নং ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার এবং ভোটার রয়েছে প্রায় ২৪ হাজার। এ ওয়ার্ডের দক্ষিণে ২৫নং ওয়ার্ড এবং হাজী ইসমাইল লিং রোড, উত্তরে মজিদ সরণি, পূর্বে ১৯নং ওয়ার্ড গোরবচাকা এবং পশ্চিমে রয়েছে ময়ূর নদ। এ ওয়ার্ডের মধ্যে বিভাগীয় যাদুঘর, জিয়া পাবলিক হল, সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, ট্রাক টার্মিনাল, পাইকারী কাঁচাবাজার, হোটেল সিটি ইন, হোটেল মিলেনিয়াম, ডেল্টা টাওয়ার (২২ তলা), সোনাডাঙ্গা মডেল থানা, গাজী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল, আইসিএমএ ভবন, সাবেক ফর্টিস হসপিটাল, গল্লামারী শ্মশান, গঠমঠামারী কিলখানা, জীবন বীমা, শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বর্তমান কাউন্সিলর এবং বিএনপি নেতা মোঃ হাফিজুর রহমান মনি দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।
সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ¦ এসএম রাজুল হাসান রাজু জানান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বেশ উন্নয়ন হয়েছে। মেয়র এবং এমপি সাহেবের আন্তরিকতায় এসব সম্ভব হয়েছে। তবে এলাকায় মাদকের আধিপত্য রয়েছে এটিকে নির্মূলে আমার আপ্রাণ চেষ্টা রয়েছে। এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে। পুরো এলাকাকে ছোট ছোট ভাগ করে এলাকার মুরব্বিদের সাথে নিয়ে উন্নয়ন কমিটি তৈরি করে উন্নয়ন করা এবং যেকোনো সমস্যার তৎক্ষণাৎ সমাধানে ভূমিকা রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
১৮ নম্বর ওয়ার্ড বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোঃ মসিউর রহমান রমজান জানান, নগরীর প্রধান খাল বা ময়ূর নদটিও এই ওয়ার্ডের গায়ে। ফলে আশাপাশের অনেক ওয়ার্ডের ড্রেনের পানি নামে এই ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে। এজন্য পরিকল্পনার অভাবে এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। আমি সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে বিশেষ করে এলাকার মুরব্বিদেরকে সাথে নিয়ে উন্নয়ন করব এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা করব। প্রত্যেকটি নাগরিকের দোর গোড়ায় নাগরিক সেবা পৌঁছে দিতে সচেষ্ট থাকব। এই ওয়ার্ডের একটি নির্দিষ্ট ওয়ার্ড অফিস নেই। সেটি নির্মাণে ভূমিকা রাখতে চাই। সড়ক বাতি, মশক নিধন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুষ্ঠু তদারকি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে চাই। গরিব, দুঃখির ন্যায্য পাওনা বুঝে দিতে চেষ্টা করব। কিলখানাটি আধুনিকায়ক করা প্রয়োজন। আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তাইতো করোনা মহামারির সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি মুর্দা গোসল এবং দাফনে অনেক কাজ করেছি। এ কাজটি এখনো চলমান রেখেছি।
সাবেক ছাত্রনেতা মোঃ ইমরান হোসেন জানান, এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস নির্মূলে ভূমিকা রাখতে চাই। নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে জলাবদ্ধতা রয়েছে। সেটিকে পরিকল্পিতভাবে নিরসন করতে চাই। এলাকাবাসীর উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রেখেছি। আগামীতেও আমি এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে চাই। আশা করছি এলাকাবাসী আমাকে সেই সুযোগ দিবে।
সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টিএম আরিফ জানান, জলাবদ্ধতা, স্যানিটেশন ব্যবস্থায় যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। তবে ওয়ার্ড অফিসটি জর”রি ছিল। প্রশাসনকে সাথে নিয়ে এলাকাবাসীর স্বার্থে মাদক নির্মূলে কাজ করতে চাই। আমি গত নির্বাচনে প্রার্থী ছিলাম। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডটিকে আমি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে চাই। মসজিদভিত্তিক সমাজ কল্যাণ কমিটি গঠন করে পরিকল্পিতভাবে সুন্দরভাবে ওয়ার্ডকে পরিচালনা করতে চান বলে জানান খুলনা শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক এই ভিপি। তিনি আরো বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন করবো। মেয়র পরিষদ ও বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেলের প্রেরনায় একটি স্মার্ট ওয়ার্ড উপগার দিতে চাই।
স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, আমি নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের কার্যালয় কাম কমিউনিটি সেন্টার তৈরি করবো। কাচা বাজার ও মিনি পার্ক নেই। যা আমি বাস্তবায়ন করবো। বিনামূল্যে ময়লা অপসারন করা হবে। আমি নির্বাচিত হলে মশার উৎপাত, মাদক, কিশোর গ্যাং এবং বর্তমানে কিছু ছিঁচকে চোরের উৎপাত রয়েছে তা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসবো। এলাকার মাদক বিক্রেতা, চোর বা বিপথগামীদেরকে কাউন্সিলিং করে ভালো পথে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমি জয়ী হলে নাগরিক সেবা সকলের মধ্যে সমবন্টন করে এলাকাবাসীর সার্বিক উন্নয়ন করব।