
এম সাইফুল ইসলাম : খুলনা নগরের ৭ নম্বর কাস্টমস ঘাট এলাকার পশ্চিম দিকে চলে গেছে একটি সরু গলি। গলির উত্তর পাশে এরশাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অন্য পাশে ছোট ছোট টিনের ঘর। এলাকাটি গ্রিনল্যান্ড আবাসন হিসেবে পরিচিত। মূলত এটি রেলওয়ের জমিতে গড়ে ওঠা বস্তি। খুলনা মহানগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকাটি। এলাকাটি একসময় নিয়ন্ত্রণ করতেন কুখ্যাত খুনি হিসেবে পরিচিত এরশাদ শিকদার। বস্তির ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয় তিনিই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
ওই বস্তিতে ৯ হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। পরিবার রয়েছে ২ হাজারের বেশি। প্রায় সবাই শ্রমজীবী ও ভাসমান মানুষ। ২১ নম্বর ওয়ার্ডটির জনসংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। ভোটার প্রায় ২০ হাজার। ওই ওয়ার্ডের পূর্ব দিকে ফরেস্ট ঘাট রোড ও ২২ নম্বর ওয়ার্ড। পশ্চিমে ৭ নম্বর ঘাট রোড ও জোড়াগেট কাঁচাবাজার, উত্তর-পূর্বে ভৈরব নদ এবং দক্ষিণে আপার যশোর রোড। খুলনা রেলওয়ে স্টেশন, বড় বাজার, খুলনা সার্কিট হাউস, আদালত, জেলা কারাগার, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতাল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা স্টেডিয়াম, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, সিটির প্রধান ডাকঘর, টিঅ্যান্ডটি অফিস, বাংলাদেশ ব্যাংক, উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি, শিশু হাসপাতাল, জেলা রেজিস্ট্রি অফিস, জেলা পরিষদ, নগর ভবন, শহীদ হাদিস পার্ক, সদর থানা, পিকচার প্যালেস, বিআইডব্লিউটিএ, রকেট ঘাট, খুলনা ওয়াসার কার্যালয়সহ রয়েছে বহু ব্যাংক, বিমা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।
নদীর তীরবর্তী হওয়ায় জলাবদ্ধতা কম। অন্যান্য ওয়ার্ডের মতোই মশার উপদ্রব, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ একই ধরনের কিছু সমস্যা ওই ওয়ার্ডেও রয়েছে। তবে তুলনামূলক বেশ পরিচ্ছন্ন। ঘাট এলাকায় মাদক আর কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত সবচেয়ে বেশি।
২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শামমুজ্জামান মিয়া স্বপন জানান, তিনি তার সময়ে ৩৭টি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। তার ওয়ার্ডে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে তার হাতের উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। অনেক প্রকল্প এখন চলমান রয়েছে। ২২টি মাদকের আখড়া উচ্ছেদ করা হয়েছে। এলাকায় কোন মাদক চলবে না। ৬নং ঘাটে রিভিউপার্ক নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিদিন শত শত লোক বিনোদনের জন্য আসেন। বড় বাজার এলাকায় ভৈরব নদের ভাঙ্গন রোধ করে রাস্তা নির্মাণ করা পরিকল্পনা রয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এ্যাডভোকেট মঞ্জুরুল ইমাম রোড সংস্কার করা হবে। শহীদ হাদিস পার্ক আধুনিকায়ন করা হবে।বস্তি বাসিদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা হয়েছে। তিনি এলাকার অসহায় ও গরীব লোকদের মাঝে টিসিবি কার্ড, বয়স্ক ও বিধবা ভাতাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করেছেন। পুন: নির্বাচিত হলে চলমান প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। রেলওয়ের জায়গায় বাসবাসকারীদের স্থায়ী ভাবে বসবাস করার উপযোগি করার চেষ্টা করা হবে। তিনি সকলের দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী শ্রমিক নেতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোতালেব মিয়া জানান, নাগরিক সেবায় বঞ্চিত ওয়ার্ডবাসি। এই ওয়ার্ডে ভাসমান মানুষের বসবাস ও ঘোরাফেরা বেশি। আমি নির্বাচিত হলে তাদের জন্য স্থায়ী আবাস বন্দোবস্ত করা হবে। আমি এই ওয়ার্ডটিতে ডিজিটাল ও স্মার্ট ওয়ার্ডে রূপান্তর করতে চাই। সুপেয় পানির সংকট রয়েছে। সংকট দূরীকরণে নলকূপ স্থাপন করা হবে। সিসি ক্যামেরার আওতাভূক্ত করা হবে পুরো এলাকা।