এম সাইফুল ইসলাম
খুলনার আড়ংঘাটার পঞ্চানন সরদার। পিতার নম রসিক লাল সরদার। মায়ের নাম গেলোদা সুন্দরী র্সদার। পাইকগাছার ঐতিহাসিক কপিলমনি যুদ্ধে আত্বঘাতি গুলিতে জীবন হারান তিনি। ঘুমন্ত অবস্থায় নদী পথে এ ঘটনা ঘটায় তার লাশ খুজে পাওয়া যায়নি। তিনি অবিবাহিত থাকায় তার পরিবার পরিজন খুজে পাওয়া যায়নি। তবে তার যুদ্ধকালীন কমান্ডার নূরুল ইসলাম মানিক এখনও বেছে আছেন।
তার বর্ননানুযায়ী পাইকগাছার কপিলমুনি এলাকার মুক্ত হয় ৯ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এ দিনে ৩ দিন সম্মুখ যুদ্ধের পর ১৫৫ জন রাজাকার আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে দক্ষিণ খুলনার এ রাজাকার ঘাঁটির। ওই দিন উপস্থিত হাজারো মানুষের রায়ে রাজাকারদের গুলি করে হত্যা করা হয়। ১৯৭১ সালে কপিলমুনির রায় সাহেব বিনোদ বিহারি সাধুর সুরম্য বাড়িটি পাকিস্তানি দোসররা দখলে নিয়ে সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসে। তখন ওই এলাকায় নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ভোর ৬টা নাগাদ কার্পোজারী করা হত এলাকায়। নিরীহ মানুষদের ধরে কপোতাক্ষ নদের ফুলতলায় এনে নির্যাতন করা হত।
এর প্রতিরোধে ৫ ডিসেম্বর খুলনার সকল মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারগণ একত্রে মিলিত হয়ে রাজাকারদের এই ক্যাম্প আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অবশেষে ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মুক্তিযোদ্ধারা চারিদিক থেকে কপিলমুনি শত্রুঘাঁটি আক্রমণ করে।
তিদিন যুদ্ধ শেষে ৯ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে নিরস্ত্র হয়ে ১৫৫ জন রাজাকার মাইকে আত্মসমর্পণের ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নূরুল ইসলাম মানিক পঞ্চানন সরদার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, আমরা যুদ্ধ জয়ের নৌকায় করে ফিরে আসছিলাম। পথিমধ্যে রাত হয়ে যাওয়ায় নৌকায়ই আমরা রাত্রিযাপন করি। এ সময় ঘুমন্ত অবস্থায়-ই পঞ্চানন সরদারের বন্দুক দিয়ে আত্বঘাতি গুলি হয়। মারা যান এ মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আরও বলেন, তার বাড়ি খুলনার আড়ংঘটা। তবে তার স্ত্রী ও সন্তান ছিল না।
তার আরেক সহযোদ্ধা মুক্তিযোদ্ধা গবেষক আবু জাফর। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, কপিলমুনি তিনদিন সম্মুখযুদ্ধে জয় হয় আমাদের। এরপরে যখন জয়ের আনন্দ নিয়ে ফিরছিলাম ঠিক তখনি হারাতে হয়েছে রণাঙ্গনের বীর সেনানী পঞ্চানন সরদারকে। যা আমাদের সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ব্যাথিত করেছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত