পাইকগাছা প্রতিনিধি
কপোতাক্ষ নদ খনন প্রকল্প দ্রæত বাস্তবায়নের আহŸান জানিয়ে পরিবেশ আন্দোলন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, দখল, দূষণ ও ভরাট হওয়ার কারণে কপোতাক্ষ নদের স্বাভাকি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। যে কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপক‚লীয় অঞ্চলে দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়েছে। দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় কপোতাক্ষ নদের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ নিশ্চিত করার আহŸান জানিয়েছেন তারা।
শনিবার পাইকগাছা উপজেলার মাহমুদকাটী গ্রামে ভাঙন কবলিত কপোতাক্ষের পাড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এ আহŸান জানান তারা। সুন্দরবন ও উপক‚ল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, রফিকুল ইসলাম আজাদ, রাজু আহমেদ, মনিরুজ্জামান মুকুল, সাকিলা পারভীন, মো: নূর আলম শেখ, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জেল সোহেল, এড. প্রশান্ত মÐল, ডা. বাসুদেব রায় ও প্রভাত দেবনাথ প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। অনাদিকাল থেকে নদীর পানির দ্বারাই আমাদের সবুজ-শ্যামল প্রকৃতি, কৃষি ও মানবজীবন সিঞ্চিত হচ্ছে। কিন্তু আমাদের নদীর সংখ্যা দেড় হাজার থেকে আড়াই শতে নেমে আসছে। তাই নদী রক্ষায় আমাদেরকে এখনই সচেতন হতে হবে, প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। কপোতাক্ষ নদের প্রবাহ স্বাভাবিক না রাখতে পারলে সাতক্ষীরা, খুলনা, যাশোর ও ঝিনাইদহ জেলার কপোতাক্ষ পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকায় বিপর্যয় নেমে আসবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তারা।
মানবন্ধনের আগে বাপা সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিলের নেতৃত্বে ঢাকা থেকে আগত প্রতিনিধি দল পাইকগাছার মামুদকাটী ছাড়াও রামনাথপুর, রাড়ুলী ও কপিলমুনি এবং সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কপোতাক্ষের বাস্তব অবস্থা ঘুরে দেখেন। তারা দীর্ঘ দুই যুগ ধরে কপিলমুনি-কানাইদিয়া সেতুর পিলার বসিয়ে রেখে নদীর গতিপ্রবাহ নষ্ট করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা কপোতাক্ষ নদের বালিয়া অংশ থেকে আগড়ঘাটা পর্যন্ত খনন কাজ দ্রæত শুরুর দাবি জানান।
এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায়, কপোতাক্ষের অব্যাহত ভয়াবহ ভাঙ্গনে শুধু বাপ-দাদার ভিটা মাটিই নয়, ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, কবর স্থানসহ হাজার-হাজার ফলজ ও বনজ বৃক্ষ। আবার নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। আবার অনেকে উদ্বাস্তু হয়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছে।
কপোতাক্ষ নদের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়েছে
Leave a comment