
কয়রা প্রতিনিধি : কয়রায় একটি খালের সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জামানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জান এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মোতাবেক আমাদী ইউনিয়নের খেওনা খালের সীমানা নির্ধারণের দায়িত্ব পান উপজেলা প্রকৌশলী। এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য সার্ভেয়ারকে সঙ্গে নেন তিনি। গত সোমবার বিকেলে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে সার্ভেয়ারকে দেখে উত্তেজিত হয়ে যান চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সামনে সার্ভেয়ার আক্তারুজ্জানকে মারধর শুরু করেন চেয়ারম্যান ও তাঁর অনুসারীরা।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. আক্তারুজ্জান বলেন, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার আমাদী ইউনিয়নের খেওনা খালের তদন্তে সহযোগিতার জন্য আমাকে সাথে নেন। ইঞ্জিনিয়ারের সাথে উভয় পক্ষের কথা শুনছিলাম এমন সময় চেয়ারম্যান সাহেব এসে খারাপ ভাষায় আমাকে গালিগালাজ শুরু করেন। এবং আমি এখানে কেন এসেছি তা জানতে চান। গালিগালাজের বিষয়টি প্রমাণ রাখার জন্য আমি মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে থাকি। এটা দেখে চেয়ারম্যানসহ তাঁর সাথে থাকা লোকজনেরা আমাকে মারতে থাকে। আমার হাতে মুখে বুকে এবং গলার মারের চিহ্ন এখনো রয়েছে।
এদিকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে আমাদী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জুয়েল বলেন, জেলা প্রশাসক উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারের ওপর খালের তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। কিন্তু তদন্তের সময় সার্ভেয়ারকে দেখে আমার মনে কেমন যেন একটা খটকা লাগে। সার্ভেয়ারের সাথে কথোপকথনে সময় সে ভিডিও করা শুরু করে। এই দেখে আমার অনুসারীরা সার্ভেয়ারের সাথে ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। সার্ভেয়ারকে আমার কোনো লোকজনই মারপিট করেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী দারুল হুদা বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই খালের তদন্ত করতে যাই। সহযোগিতার জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সাথে নেই। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সার্ভেয়ারকে সেখানে কেন আনা হলো জানতে চান। এ সময় সামান্য উত্তেজনা দেখা দেয়। চেয়ারম্যানের লোকজন সার্ভেয়ারকে মারধর করে সেখান থেকে বের করে দিতে চেষ্টা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে সকলে চলে যান। বিষয়টি ইউএনও এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মমিনুর রহমান বলেন, ঘটনাটি জানার পর উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, চেয়ারম্যান ও সার্ভেয়ারকে নিয়ে গত মঙ্গলবার আমার কার্যালয়ে বসেছিলাম। যে ঘটনা ঘটেছে খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে সার্ভেয়ার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।