জন্মভূমি রিপোর্ট : কয়রায় জাহাঙ্গীর আলম আকাশ নামে এক সাবেক ছাত্রলীগের নেতা তাকে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় কয়রা হাইস্কুল মোড়ে সবুজের চা দোকানে এ ঘটনা ঘটে। আকাশ সদর ইউনিয়নের ১নং কয়রা গ্রামের হাবিবুল্লাহ গাজীর ছেলে। এঘটনায় রোববার কয়রা থানায় মামলা হয়েছে। মামলার আসামিরা হল আশরাফুল ইসলামের ছেলে আশিক (২৩), মাজহারুল ইসলামের ছেলে আরাফাত হোসেন (২৫) ও ৩। সজিব হোসেন (২৩)সহ অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬জন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, পুর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্য ১ ও ২নং সন্ত্রাসী চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আকাশের মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। ৩নং আসামি হাতুড়ি দিয়ে আকাশের বাম চোখে আঘাত বাম হাতে, বুকে ও পিঠে এলোপাতাড়ী পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এসময় তার কাছে থাকা পিতার গরু বিক্রির এক লাখ টাকা ২৫ হাজার টাকা ও স্মার্টফোন ১নং আসামী ছিনিয়ে ছিনিয়ে নেয়। আকাশের চিৎকার আর্তনাদে স্থানীয়রা হাজির হলে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আকাশ বলেন, আমি বাবার ব্যবসার গরু বিক্রির এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে কয়রা বাজারে পৌঁছালে চেয়ারম্যান বাহারুল ইসলামের ভাগ্নে আশিক ও আরাফাতসহ ৫-৬ জন আমাকে মাথায় রামদা, চাপাতি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে কোপাতে থাকে। মানুষ মানুষকে এভাবে মারে না। ওরা আমাকে ইচ্ছাখুশি মতো কুপিয়েছে। আমি পা ধরেও ক্ষমা পাইনি। ওরা আমার থেকে ব্যবসার এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছে। এরআগেও গত বছর আমাকে তুলে নিয়ে বাহারুলের টর্চার সেলে আটকিয়ে ৬ ঘন্টা অমানবিক মারপিট করে। আমার টাকা ও মোবাইল ফোন ফেরত চাই। কয়রাবাসীকে চেয়ারম্যান বাহারুল ও তার গুন্ডা বাহিনীর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযোগ রয়েছে, চেয়ারম্যান বাহারুলের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে হামলার শিকার হয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, আ’লীগ নেতা, অধ্যক্ষ, শিক্ষক ও সার্ভেয়ারসহ কয়রার বিভিন্ন সনামধন্য মানুষও। জবর দখল, চাঁদাবাজী, ছিনতাইয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ বিষয়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম বাহারুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য খুলনায় অবস্থান করছি। কি হইছে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলতে পারবো।
কয়রা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এবিএমএস দোহা বলেন, ঘটনাটি শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। থানায় মামলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মাহবুব হাসান বলেন, তার বিরুদ্ধে আগেও অনেক অভিযোগ শুনেছি। আমরা তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। যেই হোক না কেন, কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করার সুযোগ নেই। আমরা মাদক ও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে ‘জিরোটলারেন্স’ আছি।