এম সাইফুল ইসলাম
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই আওয়ামীলীগের ওয়ার্ডভিত্তিক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক কমিটি মাঠে কাজ করছে। সম্প্রতি খুলনা মহানগর সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক অসুস্থ হয়ে রাজধানী ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার অবর্তমানে কোন ধরনের সমস্যা হবে না দাবি করেন নেতা-কর্মীরা। তবে ভারপ্রাপ্ত কেউ দায়িত্বও নিচ্ছেন না এ মুহূর্তে। যে কারণে প্রস্তুত হচ্ছে না কেন্দ্র নির্দেশিত সাংগঠনিক টিম।
ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে নিয়মিত খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দলীয় কর্মকা- পালন করেছে খুলনা আওয়ামী লীগ। করোনায় খুলনায় স্বাস্থ্যসেবায় যেন কোনো ঘাটতি না হয় সেজন্য দলীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা চিকিৎসায় হাই ফ্লো হিউমিডিফায়ার, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটরসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম দেয়া হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষায় পারসোনাল প্রটেকটিভ ইক্যুইপমেন্টের (পিপিই) ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুস্থ নেতা-কর্মীরা করোনা আক্রান্ত হলে তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। করোনাকালে রাজনীতির চেয়ে মানবিক বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দ জানান। জনসচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরণ, জীবাণুনাশক স্প্রে ও মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা মাইকিং করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, নির্দিষ্ট সময়ের পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, সন্ধ্যার পর কোনো স্থানে আড্ডা না দেওয়া ও রাত ৮টার পর বাড়ি থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি যারা করোনায় দুর্ভোগে পড়েছেন তাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। ওয়াডভিত্তিক দুস্থ, অসহায় মানুষের নির্ভুল তালিকা তৈরিতেও নেতা-কর্মীরা সহায়তা করেছেন।
কেন্দ্রের নির্দেশনায় মহানগর আওয়ামী লীগ গঠন করবে সাংগঠনিক টিম। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত ও ত্যাগীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আহবান জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। যারা ছাত্রলীগ থেকে উঠে এসেছে, কঠিন সময়ে দলের জন্য ভূমিকা রেখেছেন তাদেরকে নিয়েই এই কমিটি করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব একেএম সানাউল্লাহ নান্নু বলেন, এর আগেও করোনায় আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষের পাশে ছিল। ভবিষ্যাতেও থাকবে। তবে খুলনায় কঠোর লকডাউনের কারণে এখনই সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না সাংগঠনিক কমিটির ব্যাপারে।
মহনগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, সাংগঠনিক কমিটির বিষয়ে সভাপতি না থাকায় এ মুহূর্তে-ই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে না। তবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেই সাথে সচ্ছ ও সুন্দর কমিটি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি দলের সকল শাখায় সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং সাংগঠনিক কার্যক্রমকে আরও জোরদার করতে সারাদেশে সাংগঠনিক টীম গঠনের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে দলের সকল জেলা, মহানগর এবং উপজেলা, থানা, পৌর শাখার নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে তৃণমূল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক এই ‘সাংগঠনিক টীম গঠন’র জন্য স্ব স্ব শাখাকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
নির্দেশনায় বলা হয়, সংগঠনের সারাদেশের সকল জেলা/মহানগর শাখার অধীন উপজেলা/থানা/পৌর শাখা আওয়ামী লীগের গতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষে জেলা/মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংগঠনিক টীম গঠন করবেন। এই টীম জেল/মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা/থানা/পৌর শাখার বিদ্যমান সাংগঠনিক সমস্যা সমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়, অনুরূপভাবে সকল উপজেলা/থানা/পৌর শাখা আওয়ামী লীগের অধীন ইউনিয়ন/ওয়ার্ড/ইউনিট শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও জোরদার করার লক্ষ্যে উপজেলা/থানা/পৌর আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাংগঠনিক টীম গঠন করবেন। এই টীম উপজেলা/থানা/পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিয়ন/ওয়ার্ড/ইউনিট শাখার বিদ্যমান সাংগঠনিক সমস্যাসমূহ দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
করোনাকালে রাজনীতি: খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রস্তুত হচ্ছে না সাংগঠনিক টিম
Leave a comment