সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: ভারতীয় সীমান্তে বাংলাদেশি যুবতীর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। আটক করা হয়েছে সে দেশের এক নাগরিক। সাতক্ষীরার কলারোয়া সীমান্তের ওপারে ভারত সীমান্তে ফসলী ক্ষেতের মধ্যে ওই যুবতীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সীমান্তের একাধিক সুত্র জানায়, জেলার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী সুলতানপুর গ্রামের ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের স্বরূপনগর থানার গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুনরাজপুর গ্রামের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত লাগোয়া ফসলি ক্ষেতে গত মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রক্তাক্ত ও মুখমন্ডল পুড়িয়ে দেয়া যুবতীর লাশ উদ্ধার কওে ভারতীয় পুলিশ। পরে জানা যায় সে বাংলাদেশি, থাকতো মুম্বাইয়ে। ওই ঘটনায় পার্শ্ববর্তী এক ভারতীয় ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করেছে। সীমান্তের ওপারের গোবিন্দপুর গ্রামের গোলাম মল্লিক, রুবেল, শাহাদতসহ বেশ কয়েকজন ইন্টারনেটে জানান, সীমান্তে ক্ষেতের ভেতর মঙ্গলবার উদ্ধার করা হয় যুবতীর মরদেহ। হাত-পা বাঁধা, পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে মুখ। ওই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা জুড়ে। পরে মৃতের পরিচয় জানার পাশাপাশি ঘটনা তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে হাত-পা বাঁধা ওই যুবতী দেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে এক ব্যক্তি। মুম্বাইতে বিউটি পার্লারে কাজ করতেন বাংলাদেশি ওই যুবতী। দেশে ফেরার পথে এই ঘটনা ঘটে এমন দাবী পুলিশের।
তারা জানান, স্বরূপনগর থানার গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গুনরাজপুর গ্রামে ২৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকালে একটি কাকরোল ক্ষেতে আনুমানিক ২০ বছর বয়সী এক যুবতীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তার গলার নলি কাটা ছিল। মুখমন্ডল ওড়ানো পেঁচানো ও আগুনে ঝলসানো ছিলো। দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয় একটি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন। লাশ উদ্ধারের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে পার্শ্ববর্তী গ্রামের এক দালালকে। তারা আরো জানান, কাকরোল ক্ষেতের মধ্যে হাত পা বাঁধা, গলার নলি কাটা অবস্থায় পড়েছিলো দেহ। যুবতীর মুখের এক পাশ পোড়া ছিল। সীমান্ত এলাকায় ওই যুবতীর বীভৎস দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় সীমান্ত জুড়ে। প্রথম থেকেই এই ঘটনায় দালালচক্রে তত্ব উঠে আসছিলো। ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই সেই খুনের কিনারা করলো ভারতীয় পুলিশ।
তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃত যুবতী বাংলাদেশি। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকার কাছে শ্যামপুরে। ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুল অভিযুক্ত নিছার আলি মোল্লা নামে ভারতীয় এক দালালকে গ্রেফতার করে স্বরূপনগর থানার পুলিশ। আটক ব্যক্তির বাড়ি স্বরূপনগরের বিথারী-হাকিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দীবাড়ি গ্রামে। তাকে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায়, বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার ড.জবি থমাস কে,বাদুড়িয়ার এসডিপিও অভিজিৎ সিনহা মহাপাত্র ও স্বরূপনগর থানার পুলিশ আধিকারিক প্রতাপ মোদকের নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী টিম তৈরি করা হয়। ওই যুবতীর কাছ থেকে উদ্ধার মোবাইল ফোন, পোশাক, বাংলাদেশি ঠিকানা ও রক্তের নমুনাসহ মাটি সংগ্রহ করে বসিরহাট পুলিশ জেলার স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের একটি দল।
বিষয়টি নিয়ে ভারতের বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস কে. ভারতীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, মুম্বইতে দীর্ঘদিন ধরে বিউটি পার্লারে কাজ করতেন ওই যুবতী। সেখান থেকে মোটা অর্থ নিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলো সে। তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মৃত যুবতীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। মনে করা হচ্ছে টাকা হাতাতেই পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে তাকে। এই খুনে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
কলারোয়া সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশী যুবতীর লাশ উদ্ধার
Leave a comment