সফিকুল ইসলাম শাওন, কাঁঠালিয়া : কাঁঠালিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হোসাইন বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড নবায়ন, লাইসেন্স ইস্যু, নবায়ন এবং দোকান ও গুদাম পরিদর্শনে টাকা দাবি করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।উপজেলায় ১০ টাকা কেজি (বর্তমানে ১৫ টাকা) দরে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ডসংখ্যা.. হাজার…টি।কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নতুন কার্ড ইস্যু ও নবায়ন চলছে। কার্ড নবায়ন করতে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হোসাইন কার্ডপ্রতি ৫০ টাকা দাবি করেছেন। এ ছাড়া ওই কর্মকর্তা রাইস মিলের লাইসেন্স নবায়ন, নতুন লাইসেন্স ইস্যু, ফুড গ্রেইন লাইসেন্স, গুদামে চাল সরবরাহ, সরবরাহের চুক্তি, জামানত বিমুক্তির সময় এবং মিল পরিদর্শনের সময় কাল্পনিক মজুদ দাবি করে ঘুষ দাবি করেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক জানান, চালের ডিও ইস্যু করার সময় ডিওপ্রতি ১০০০ টাকা, গুদামে চাল সরবরাহের ক্ষেত্রে টনপ্রতি ৩০০ টাকা, মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ১০০ টাকা দিতে হয়।লাইসেন্স নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা, চাল সরবরাহের চুক্তির সময় দুই হাজার টাকা প্রদান না করলে তিনি কোনো কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন না। ডিলারদের দোকান ও গুদাম পরিদর্শনের সময় এক হাজার টাকা ঘুষ না দিলে ডিলারশিপ বাতিলের হুমকি প্রদান করেন। অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নাজমুল হোসাইন বলেন, ডিলাররা আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছেন তা সবই মিথ্যা। একটি পক্ষ শত্রুতাবশত আমাকে হেনস্তা করতেই এসব ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বারবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।খাদ্যগুদাম উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃনাজমুল হোসাইন বর্তমান কর্মস্থলে যোগদানের তারিখ : ০৬ আগষ্ট২০২০বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ধান ক্রয়ে অনিয়ম, গুদাম থেকে চাল নিতে ঘুস, কৃষকদের কাছ থেকে টাকা আদায়সহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পড়েছেন উপজেলা নাজমুল হোসাইন তিনি কাঠালিয়াতে যোগদানের পর থেকেই কৃষক, ঠিকাদার, ইউপি চেয়ারম্যান, ডিলারদের জিম্মি করে অবৈধভাবে টাকা আদায় করছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, চলতি বছর সরকার কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে ধান ক্রয়ের ঘোষণা দেয়। ওই ঘোষণা অনুযায়ী উপজেলায় ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো। কিন্তু উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রন নাজমুল হোসাইন হয়রানির কারণে কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজন কৃষক থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ধান ক্রয় করছেন তিনি। খাদ্যা নিয়ন্ত্রণ সরকারি সিল সম্বলিত বস্তা বিক্রি করে অপেক্ষাকৃত বস্তা কিনে ধান গুদামজাত করছেন। এতে ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।কৃষকরা জানান, ধান নিয়ে খাদ্যগুদামে গেলেই কর্মকর্তার হয়রানির শিকার হতে হয়। ধানে আদ্রতা বেশি, চিটা আছে, মান ভালো না এধরনের নানান অজুহাত দিয়ে ধান ফিরিয়ে দেন। পরে বাজারের অপেক্ষাকৃত কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন এবং তাঁরা ধান চাষে আগ্রহ হারাবেন। খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দের শতাধিক মন ধান ক্রয় করেছেন। কৃষকদের ধান বিক্রির জন্য খাদ্যগুদা মন প্রতি ৫০ টাকা, নৈশ প্রহরীকে ১০টাকা দিতে হচ্ছে। উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ে অনীহা প্রকাশ করে থাকেন। তিনি পার্শ্ববর্তী উপজেলার জনৈক কৃষক কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দের শতাধিক মন ধান ক্রয় করেছেন। এতে উপজেলার কৃষকরা ন্যায্যমূল্যে ধান বিক্রি করতে পারনে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জানান, কাঠালিয়া খাদ্য অফিসে থেকে টিআর/কাবিখা, জেলেদের চাল, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাল নিতে হলে টনপ্রতি উপজেলা অফিসে কর্মকর্তা ও অফিস সহকারী আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় নগদ টাকা দিতে না পারলে ১/২ বস্তা চাল রেখে দেন তিনি। ডিলার, ঠিকাদার কিংবা জনপ্রতিনিধি কেহই টাকা কিংবা চাল না দিয়ে গুদাম থেকে মালামাল নিতে পারেন না। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এক ডিলার বলেন, গুদাম থেকে প্রতিবার চাল নেওয়ার সময় নাজমুল হোসাইন এক বস্তা করে চাল রেখে দেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসবে।কোনো ডিলারের কাছ থেকে চাল রাখা হয়নি। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি মুঠোফোনে বলতে অনিচ্ছা পোষন করেন।
চোখ রাখুন দ্বিতীয় পর্বে……………………………….