কাঁঠালিয়া সংবাদদাতা : ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় সরকারের কৃষি প্রণোদনা বিতরণে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি কাঠালিয়া কৃষি অফিসের উপ সহকারী মোঃ জহিরুল ইসলাম বসির ও আসাদুজ্জামান রনির বিরুদ্ধে বরিশাল খামার বাড়ি উপ-পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কৃষি প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ আউরা গ্রামের কৃষক মোঃ নাসির উদ্দিন পিন্টু।
লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, আমি (নাসির) সহ আমার গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষি ও কৃষক সমাজের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিনামূল্যে দেয়া বিভিন্ন কৃষি উপকরণের কৃষি প্রদর্শনী চাষসহ প্রণোদনার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমরা কোনো প্রকার বরাদ্দ ও সুযোগ-সুবিধা পাই না। এতে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন-কল্যাণে সরকারের মহতী উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে আমি কৃষক হিসেবে বুঝতে পেরেছি। আমি ছাড়াও কাঠালিয়া সদর ইউনিয়নের বেশিরভাগ প্রাপ্তিক কৃষক সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী জহিরুল ইসলাম বসির তার নিকটাত্মীয়দের সরকারের বরাদ্দকৃত কৃষি উপকরণ, প্রণোদনা ও প্রদর্শনী প্লটের বরাদ্দসহ বিভিন্ন কৃষি উপকরণে ব্যাপক অনিয়ম করে আসছেন। যা মাঠপর্যায়ে তদন্ত করলে প্রদর্শনী প্লটে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পড়বে। কৃষি খাতের উন্নয়েনে সরকারের মহতী কর্মসূচির উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যমাত্রা এ ধরনের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার অনিয়মের কারণে ব্যাহত হচ্ছে।
কৃষি অফিস বলছে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সরিষা, খেসারি, মসুর, চিনাবাদামসহ বিভিন্ন ফসলের প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে এবং কৃষকদের সব বরাদ্দ পূর্ণভাবে বন্টন করা হয়েছে। কিন্তু নাম-পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই অফিসের একটি সূত্র বলছে, উন্নত মানের ধান, গম, পাট ও ভুট্টার বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণের নামে ৫ বছরের একটি প্রকল্প রয়েছে। যে প্রকল্পের মাধ্যমে ১৫ জন কৃষককে ৫ একরের একটি করে প্রদর্শনী প্লট দেওয়ার কথা। প্রতিটি গ্রুপ ১৫ হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয় না। হেক্টরপ্রতি কৃষকের জন্য যে পরিমাণ বীজ, সার, কীটনাশক, টাকাসহ যেসব উপকরণ দেওয়ার কথা, তা-ও দেওয়া হয়েছে নামমাত্র।
এ ছাড়া জিকেবিএসপি, কন্দাল ফসল, এনএটিপি-২, তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে কৃষক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্রশিক্ষণে অংশ নেন ৩০ জন কৃষক। ওই প্রশিক্ষণে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষকের জন্য খাবার বাবদ বরাদ্দ ৪০০ টাকা এবং ব্যাগ বাবদ ৬৫০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কৃষকদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ১০০ টাকা দামের ১ প্যাকেট বিরিয়ানি আর ১০০ থেকে ১৫০ টাকার একটি ব্যাগ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান রনি বলেন, ‘কৃষক বরাদ্দের কোনো কপি আমাদের দেওয়া হয় না। অফিস থেকে মৌখিকভাবে জানানো হয়, আমরা ডায়েরিতে নোট করে নিই।’
জহিরুল ইসলাম বসির বলেন আমি ঐ ব্লকের না, আমি কোনো সরকারি মালামাল বিক্রি করিনি, সঠিক তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে কারা সরকারি মালামাল বিক্রি করে দেয়।
এ বিষয়ে কাঠালিয়া উপজেলা কৃষি কমর্র্কতা তানজিলা বলেন, এখনো আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত