কাউখালী (পিরোজপুর) প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, শয্যা ও ভবন শংকটের কারনে রোগীর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র চিকিৎসার মাধ্যম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটি একের পর এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৬ বৎসরেও নতুন ভবনের কাজ না হওয়ায় বর্তমানে অস্থায়ী ভবনে চিকিৎসা, জরুরি সেবা , ভর্তি রোগ ও অফিসিয়াল কার্যকলাপ চলছে। ভবন না থাকার কারণে ভর্তি রোগিদের শয্যা দিতে না পারা। ডাক্তার, নার্স ও অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একই রুমের ভিতরে গাদাগাদি করে কাজ করতে হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই দুর্ভোগ দেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন মহারাজ তার তত্ত্বাবধানে অস্থায়ী একটি টিন সেট ভবন নির্মাণ করে দিচ্ছেন ভর্তি রোগীদের শয্যা দেবার জন্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৪ জন মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও আছে মাত্র তিনজন মেডিকেল অফিসার। তিনজন মেডিকেল অফিসার দিয়ে উপজেলার দেড় লক্ষ জনগণের চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ঝুকি হয়ে পড়েছে। তিনজন চিকিৎসকের ভিতরে মাঝে মাঝে দুই একজন চিকিৎসকরা ঢাকা সহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণে যেতে হয় তখন মাত্র একজন চিকিৎসক দ্বারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কার্যকলাপ চলে।
ইউনিয়ন পর্যায়ে কোন মেডিকেল অফিসার নেই। এদিকে কাউখালী হাসপাতালে বর্তমানে কোন ভবন না থাকায় অস্থায়ী হাসপাতালের ভবনে মাত্র ২০ রোগীর বেডের জায়গা রয়েছে। কিন্তু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় দ্বিগুণ রোগী ভর্তি থাকে ফলে এক-এক সিটে দুইজন মাঝে মাঝে তিনজন রুগিও থাকে। ফলে রোগীদের দুর্ভোগের কোন শেষ নাই। হাসপাতালে ভর্তি রোগী মর্জিনা বেগম বলেন, কাউখালীতে মাত্র একটি হাসপাতাল তার অবস্থা এতই নাজুক যে একই বেডে দুই জন করে রোগী থাকতে হয়। হাসপাতালে ডাক্তারও নাই, আমি অসুস্থ হইছি কোথায় চিকিৎসা নিমু কোথায় যামু, গরিব মানুষ তাই আমাগো যাওয়ার জায়গা ও নাই।
কাউখালীতে জরুরি সেবায় চিকিৎসা নিতে আসা চিরাপাড়া ইউনিয়নের হাফেজ হেমায়েত জানান, হাসপাতালের অবস্থা এতই করুন যে ডাক্তার নাই তার পরে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় দুই রুমের ভিতরে প্রতিদিন শতশত রোগীকে একজন, মাঝে মাঝে দুই জন ডাক্তার চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। এতে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে চিকিৎসা নিতে ডাক্তারদেরও কষ্ট হচ্ছে রোগীদেরও কষ্ট হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ডাক্তার সংকট ও কাউখালীর হাসপাতালের এই করুন অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার সুজন সাহা বলেন, অস্থায়ী ভবনে ঝুঁকির ভিতরে আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ডাক্তার সংকট থাকার কারণে চিকিৎসা সেবায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। রোগীদের সীটের অভাবে অনেক সময় একই বেডে একাধিক রোগী থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, কাউখালীতে ডাক্তার সংকট রয়েছে বিষয়টা আমি অবগত আছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।