
সিরাজুল ইসলাম শ্যামনগর : বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় আয়েশা খাতুন নামের এক সন্তানের জননীকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
শ্যামনগর উপজেলার হাজীপুর গ্রামের আক্তার মল্লিক জানান, তিন বছর আগে তার মেয়ে আয়েশা খাতুনের সঙ্গে কালিগঞ্জ উপজেলার আড়ংগাছা গ্রামের মহব্বত আলী গাজীর ছেলে হাফিজুর রহমানের (২২) ৪০ হাজার টাকা কাবিনে বিয়ে দেন। বিয়ের সময় সাধ্যমত মেয়ে ও জামাতাকে উপহার সামগ্রী দেন তিনি।
বিয়ের পর জামাতাকে দুই বার দুটি মোবাইল ফোনর কিনে দেন তিনি। বর্তমানে তাদের এক বছর দুই মাসের একটি সন্তান রয়েছে। এ ছাড়া শরিয়তপুরে মাটি কাটতে নিজের ভ্যান বাড়িতে রেখে গেলে ওই ভ্যান জামাতা নিজে চালাত। একপর্যায়ে জামাতা তার কাছে আবারো মোবাইল ফোন দাবি করলে তিনি শরীয়তপুর থেকে ফিরে দেবেন বলেন।
একপর্যায়ে গত ১৫ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আয়েশার মাধ্যমে মা অমেনা খাতুনের কাছে জামাতা ৩০ হাজার টাকা চায়। দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় ১৫ মে দিবাগত রাত দুটোর মধ্যে নির্যাতন করে আয়েশাকে হত্যার পর গলায় ওড়না পেচিয়ে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচার চালানো হয়।
রাত আড়াইটার দিকে জামাতার বড় ভাই হাবিবুর রহমান আমেনাকে মোবাইল করে বলে যে, তাদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ১৬ মে ভোর পৌনে ৫টার দিকে তারা আড়ংগাছায় জামাতার বাড়িতে যেয়ে দেখেন খাটের উপর মেয়ের লাশ ফেলে রাথা আছে। গলার এক দিক থেকে শাবল ঢুকিয়ে দেওয়ার চিহ্ন ও পেটের উপর নির্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ মৃত আয়েশার পক্ষে একটি সাক্ষর নেয়। যাহা পরবর্তীতে অপমৃত্যু মামলা বলে রেকর্ড দেখানো হয়। যদিও আয়েশার মা আমেনা খাতুন ১৬ মে জামাতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দেন। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া মামলা নেওয়া যাবে না বলে জানান কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক রাজীব সরদার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই সেন অনুযায়ি পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।