জন্মভূমি ডেস্ক : পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীরে আটা ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার মানুষ। এতে প্রশাসনের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১০০ জন। খবর বিবিসি।
গত শুক্রবার (১০ মে) শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মঙ্গলবার (১৪ মে) প্রত্যাহার করেন আয়োজকরা।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ২৪ বিলিয়ন রুপি (৮৬ মিলিয়ন ডলার; ৬৯ মিলিয়ন পাউন্ড) ভর্তুকি দেওয়ার এক দিন পর প্রতিবাদ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া এক ব্যক্তি শওকত নওয়াজ মীর বলেন, ‘সরকার আমাদের সব দাবি মেনে নিয়েছে।’
সহিংসতায় নিহতদের পরিবারকে সরকার আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রস্তাব দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সপ্তাহজুড়ে চলা সহিংসতা তীব্র হওয়ায় মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এছাড়া স্কুল, গণপরিবহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।
এর আগে, সোমবার (১৩ মে) আঞ্চলিক রাজধানী মুজাফফরাবাদে রেঞ্জার নামে পরিচিত আধাসামরিক বাহিনী পাঠায় সরকার।
বিক্ষোভের ফুটেজে দেখা যায়, উভয়পক্ষ একে অপরকে রড দিয়ে আঘাত করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আধাসামরিক বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছোড়ে এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে।
নিহত চারজনের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত দুইজন গুলিতে মারা গেছেন।
মুহাম্মদ কাসিম (৩৭) নামের একজন দোকানদার এএফপিকে বলেছেন, ‘(রেঞ্জারদের) প্রতিবাদকারীদের ওপর গুলি করা উচিত হয়নি। আমরা শুধু আমাদের অধিকার চেয়েছিলাম, বিনিময়ে গুলি পেয়েছি।’
মূলত এই বিক্ষোভ শুরু করে জয়েন্ট আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি। নিহতদের সম্মানে মঙ্গলবার (১৪ মে) ‘কালো দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেন তারা।
পাকিস্তান অধ্যুষিত কাশ্মীর একটি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, যার নিজস্ব আঞ্চলিক সরকার রয়েছে। গত ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের অন্যতম কারণ এই কাশ্মীর।
দিল্লী এবং ইসলামাবাদ উভয়ই এই হিমালয় অঞ্চলকে সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে। ইতোমধ্যে কাশ্মীর নিয়ে দুটি যুদ্ধ এবং স্বল্প পরিসরে একটি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বর্তমানে প্রতিবেশী দুই দেশই কাশ্মীরের কিছুটা অংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।