জন্মভূমি ডেস্ক : কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রী ঢাকা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। তবে ট্রেনের আসন স্বল্পতার কারণে প্রতিনিয়ত যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা ও রাজশাহীগামী যাত্রীরা আসনের অভাবে অনেক সময় দাঁড়িয়ে যাতায়াত করেন। এদিকে ট্রেনের বগি নষ্ট হাওয়ার কারণে প্রায় একমাসের বেশি সময় ধরে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ট্রেনে কোনো আসন বরাদ্দ পাচ্ছে না মিরপুর স্টেশনের যাত্রীরা। ফলে এই অঞ্চলের ট্রেন যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, সপ্তাহে ছয় দিন পাঁচটি আন্তনগর ট্রেন নিয়মিত এই রুটে চলাচল করে। এর মধ্যে রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ট্রেনে ২০টি আসন বরাদ্দ থাকলেও বর্তমানে ট্রেনের বগির ত্রুটির কারণে আসন বরাদ্দ বন্ধ রয়েছে। মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনে ১৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে।
এছাড়াও খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে ১০টি আসন এবং ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেসে ২০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে এর বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় দু’শতাধিক যাত্রী এই স্টেশন থেকে যাতায়াত করেন।
মিরপুর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের সহকারী দলিল লেখক মো: রফিকুল ইসলাম জোয়ারদার বলেন,‘স্টেশনটি দীর্ঘদিন বন্ধ ঘোষণার তালিকায় থাকায় এটি নিয়ে একটা সময় মিরপুর নাগরিক কমিটি আন্দোলন করে। ওই সময় কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের সদিচ্ছায় এটি পুনরায় চালু করা সম্ভব হয়। কিন্তু আসনের অভাবে রাজশাহী ও ঢাকাগামী মানুষগুলো ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।'
তিনি আরো বলেন,‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে আসন সংখ্যা বাড়ানো জরুরি। সেই সাথে রেলওয়ে স্টেশনটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়াটাও জরুরি।'
উপজেলার ধুবইল গ্রামের মো: হামিদুল ইসলাম বলেন,‘মিরপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যেখানেই যেতে চান ট্রেনে সিট পাওয়া যায় না। সেই সাথে স্টেশনের নিরাপত্তাহীনতাও রয়েছে।'
স্থানীয় মিরপুর নাগরিক কমিটির প্রচার সম্পাদক সাংবাদিক হুমায়ুন কবির হিমু বলেন,‘স্টেশনটি দীর্ঘদিন বন্ধের তালিকায় ছিল। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী মানুষের দুর্ভোগ বিবেচনা করে নাগরিক সমাজের আন্দোলনের মাধ্যমে গত বছর এটি পুনরায় চালু হয়। তবে আসন সংখ্যা কম হাওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস এবং চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি দিনের বেলা থামলেও রাতে থামে না। এ কারণে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে।'
মিরপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো: জমির উদ্দিন বলেন,‘মিরপুর স্টেশন থেকে অসংখ্য যাত্রী রাজশাহী এবং ঢাকায় যাতায়াত করেন। তবে এর তুলনায় ট্রেনের আসন সংখ্যা অনেক কম। এছাড়া বেশকিছু দিন ধরে কপোতাক্ষ ট্রেনের বগি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে আসন বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে রাজশাহীগামী যাত্রীরা বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে এখান থেকে রাজশাহীতে অনেক অসুস্থ রোগী চিকিৎসার জন্য যান। যার কারণে জরুরি ভিত্তিতে এখানে পুনরায় আসন বরাদ্দ করা প্রয়োজন। একইসাথে রাজশাহী এবং ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে মিরপুরের জন্য আসন বৃদ্ধি করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।'
কুষ্টিয়ার মিরপুর রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার ইসরাইল হোসেন বলেন, রাজশাহীগামী কপোতাক্ষ ট্রেনের জন্য ২০টি এবং মধুমতি ট্রেনে ১৫টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে ট্রেনের বগি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে বর্তমানে কপোতাক্ষ ট্রেনে এখান থেকে কোনো আসন বরাদ্দ নেই। এছাড়াও খুলনাগামী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে ১০টি আসন এবং ঢাকাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনে ২০টি আসন বরাদ্দ রয়েছে। তবে এইসব ট্রেনের আসন ছাড়াও প্রায় প্রতিদিন অনেক যাত্রী এখান থেকে রাজশাহী এবং ঢাকা যাতায়াত করেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত