
যশোর অফিস : যশোরের কেশবপুরে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহারের চাল আত্মসাতের ঘটনায় ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জাকারিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য ১১ মে ইউপি সদস্যকে নোটিশ দিয়েছেন। যার স্মারক নং-৪৭৮ (২০২৩)। দিন ধার্য ছিল ১৮ মে। সেই মোতাবেক বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে তদন্তের জন্য অভিযোকারীদের শুনানি গ্রহণ করা হয়। শুনানী গ্রহণ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার পলাশ কান্তি হালদার। এসময় সেখানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বাবু এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগে জানা যায়, কেশবপুর উপজেলার ১০নম্বর সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮নং ভালুঘর ওয়ার্ডের ৪৭টি অসহায় পরিবারকে গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের চাল দেয়ার জন্য অত্র ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার গাজী, তালিকা করে তাদেরকে স্লিপ দেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে ওই চাল বিতরণ করা হয়। খবর পেয়ে তালিকাভুক্ত উক্ত ব্যক্তিরা স্লিপ নিয়ে পরিষদে চাল আনতে যান। এসময় অত্র ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জাকারিয়া তাদেরকে চাল দেয়া হবেনা বলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।
বিষয়টি ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার গাজীকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে তালিকাভুক্ত ওইসব গরীব পরিবারকে চাল দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এসময় ইউপি সদস্য তার সাথেও দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তিতে তালিকায় থাকা মাত্র ১৩জনকে ১০ কেজি করে চাল দিয়ে অন্যদেরকে চাল দেয়া হবেনা বলে জানিয়ে দেয়া হয়। এরপর তালিকা অনুযায়ী চাল না পেয়ে বাকী ৩৪ টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহারের চাল আত্মসাতের অভিযোগে ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জাকারিয়ার বিরুদ্ধে গত ২৬-০৪-২৩ তারিখে যশোর জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেন।
জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
তালিকা ভুক্ত শামিমা ও সুমাইয়া খাতুন,জাহানারা বেগম, বলেন আমরা স্লিপ নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে চাল আনতে যাই। এসময় ইউপি সদস্য আমাদেরকে চাল না দিয়ে গালি-গালাজ করে তাড়িয়ে দেয়।
ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার গাজী বলেন, গেল ঈদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহারের চাল বিতরণ করার জন্য ভালুকঘর ৮নং ওয়ার্ডে ৪৭টি গরীব অসহায় পরিবারের তালিকা করা হয়। তালিকার মধ্যে মাত্র ১৩জনকে চাল দেয়া হয়েছে।
বাকী ৩৪জনের চাল ইউপি সদস্য ফারুক হোসেন জাকারিয়া আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগকারী সেকেন্দার আলী জানান, যারা চাল পাননি তারা সকলে উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষ দিয়েছেন। চাক্কুস প্রমান পাওয়ার পরও বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার চেস্টা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারী, নিরিহ মানুষকে কথায় কথায় মারপিট, নিয়োগ বাণিজ্য এবং চেক জালিয়াতির মামলাসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে।