কেশবপুর (যশোর)প্রতিনিধি : কেশবপুরে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে জমে উঠেনি কোরবানির পশু হাট। তবে আগামী বুধবার ১২ জুন জমবে কেশবপুর বড় পশু হাটের কেনাবেঁচা বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
এ উপজেলায় কেশবপুর,সরসকাটি, সাতবাড়িয়া, বগা শুড়িঘাটা ভান্ডারখোলা মঙ্গলকোটে পশু হাট রয়েছে। সীমিত আকারে গরু ছাগল কেনাকাটায় নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে ক্রেতারা। পবিত্র ঈদুল আজহা কে সামনে রেখে কেশবপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার গরু ও ছাগল বিক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা এ পশু হাটে নিয়ে এসেছে। পশু হাটে বিক্রিয় জন্য আনা এসব গরু ও ছাগলের বিভিন্ন প্রকারের নাম রাখা হয়েছে। আগামী ১৭ জনু অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহা।
এবার কেশবপুর উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে উৎপাদন হয়েছে বেশি। সোমবার ১০ জুন দুপুরে কেশবপুর পৌরসভার বড় পশু হাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ছোট বড় গরু ও ছাগল কেনাবেঁচা হচ্ছে। এ পশু হাটে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ,দুই লাখ,তিন লাখ টাকার মূল্যে গরু রয়েছে। ১০ হাজার থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকার মূল্যে ছাগলও রয়েছে এ হাটে। কেশবপুর,যশোর,খুলনা,
ঢাকা,দিনাজপুর,বরিশাল,চিটাগাং, সিলেট সহ বিভিন্ন জেলার ক্রেতারাও এসেছে পশু ক্রয় করতে এ পশু হাটে। এদিকে খামার মালিকরা বলছেন গরুর খাদ্যের দাম বেশি হওয়ার ফলে গরুর দাম কম রয়েছে। কোরবানির পশুর হাটে পশুর আমদানি বেশি হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে অনেক কম। কিছু ব্যবসায়ীরা বলছেন, চোরাই পথে ভারতীয় গরু আমদানি না হওয়ায় দেশি গরু সহ বিভিন্ন জাতের গরু দাম অনেক বেশি। কেশবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় আসন্ন ঈদুল আজহার কোরবানির উপযুক্ত বিশুদ্ধ মাংসের
গরু-মহিষ-ছাগল-ভেড়া আছে ১৪ হাজার ৯৬ টি। এরই মধ্যে গরু ৩ হাজার ৮১৫ টি ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ১০ হাজার ২৮১ টি। উপজেলায় কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে উবৃদ্ধ ২২৯৪ বেশি রয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র কয়দিন বাকি। এরই মধ্যে কেশবপুর পশুর হাটে কোরবানির পশু বেঁচাকেনা জমতে শুরু করেছে। কেশবপুরে সবচেয়ে বড় পশু হাটে কোরবানির গরু-ছাগলের প্রচুর আমদানি হয়েছে। মঙ্গলকোট গ্রামের গরু ব্যবসায়ী খলিল মোড়ল,বাউশলা গ্রামের গরু ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল বলেন, প্রতিহাটে স্থানীয় জাতের গরু-ছাগলের আমদানি ভালোই হচ্ছে। দামও মুটামুটি ভালো, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে কম। বিভিন্ন ভারতীয় বর্ডার দিয়ে চোরাই পথে গরুর আমদানি না হওয়ায় আগামী হাটে জমবে পশু হাট। আর হাটে দালাল চক্র না থাকায় ব্যবসায়ীরা গরু ছাগল বিক্রিয় ও ক্রয় করে আনন্দ পাচ্ছে। দেউলী গ্রামের আয়ুব হোসেন জানান, গরুর খাদ্যের যে পরিমানে দাম বেড়েছে গরু পালন করা খুব কষ্ট কর হয়ে পড়েছে।
প্রতি মাসে ৫ হাজার টাকার খাদ্য খাওয়াতে হয়েছে। বাজারে গরু বিক্রি করে আামার লাভ হয়নি। রামচন্দ্রপুর গ্রামের গরু পালনকারী আবদুল সরদার বলেন,খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আব্দুল খালেক,মনিরুল ইসলাম,আজিবার রহমান,রিপন হোসেন সহ অনেকে গরু পানল কারীরা জানান, গরুর দাম কম হওয়ায় দেশীয় গরুর খামারিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শ্রীরামপুর গ্রামের ছাগল পালনকারী মকবুল হোসেন গাজী,মৃলগ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন,বেঁচাকেনা একেবার কম। তবে আগামী হাটে কেনাবেঁচা বেশি হবে। মনিরামপুর উপজেলার মাসনা গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন বলেন,কেশবপুর পশু হাটে সকালে ৮ টি ছাগল বিক্রি করার জন্য নিয়ে এসেছি। কিন্তু বেলা ৩ টা বেজে গেলেও একটি ছাগল বিক্রি করতে পারিনি। তবে আগামী হাটে কেনাবেঁচা বেশি হবে। এব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. অলোকেশ কুমার সরকার বলেন, কেশবপুর উপজেলায় ছোটবড় অনেক গরু ছাগল পালনকারী খামারি রয়েছে। তারা কোরবানির ঈদের হাটে কোরবানির গরু-ছাগল বিক্রি করার জন্য নিজেদের বাড়িতে গরু-ছাগল পালন করেছে। তারা যদি পশুর উপযুক্ত মূল্য না পায়, তাহলে তারাও গরু-ছাগল পালনের উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। কেশবপুর পৌর শহরের সবচেয়ে বড় পশুর হাট ইজারাদার ওয়াহিদুজ্জামান বিশ্বাস বলেন, অনেক চড়া মূল্যে পশুর হাট ইজারা নিতে হয়েছে। কোরবানি উপলক্ষ্যে পশুর আমদানিও ভালো। কিন্তু বেচা-বিক্রি খুব কম হচ্ছে। এ হাটে ভারতীয় গরুর আমদানি না হওয়ায় ও বিভিন্ন শহরের ব্যবসায়ীরা আমাদের হাটে কোরবানির গরু-ছাগল কিনতে না আসে, তাহলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তবে পশুর হাটে নিরবচ্ছিন্ন নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
কেশবপুরে জমে উঠেনি কোরবানির পশু হাট
Leave a comment