
শহিদ জয়, যশোর : যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা ভোল পাল্টিয়ে পাল্টি খেয়ে এখন বিএনপির ঘাড়ে।
বিএনপির ঘাড়ে ভর করে তারা এখন সংখ্যালঘু পরিবারসহ আ‘লীগের নেতা-কর্মিদের বাড়িতে হামলা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এসব ঘটনার সম্পর্কে স্থানীয় বিএনপি নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
বিভিন্ন সূত্র থেকে অভিযোগে পাওয়া তথ্য মতো জানা গেছে কেশবপুর উপজেলার পাঁজিয়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা বালঘাট গ্রামের বজলু ঢালির ছেলে সিন্টু ঢালি ও একই গ্রামের শওকত ঢালির ছেলে সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোঃ কুদ্দুস এবং হদ গ্রামের শের আলির ছেলে আ‘লীগ নেতা আসাদুল্যাসহ এলাকার বেশ কয়েকজন আ‘লীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা, তাদের ভোল পাল্টিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মহির বিশ্বাসের সাথে হাত মিলিয়ে তাদের পূর্বের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
এদের মধ্যে ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি মহির বিশ্বাসইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন। দল থেকে পদত্যাগ না করে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন বলে জানা গেছে। এছাড়া, অভিযুক্ত সিন্টু ঢালি ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের
১৮ ও আব্দুল কুদ্দুস ঢালি ২৬ নম্বর সদস্য। আব্দুল কুদ্দুস ঢালি গেল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০২৪) আ‘লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহীন চাকলাদারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এবং আসাদুল ঢালি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন।
এছাড়া, পাঁজিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দীনের ছেলে ডালিমও সেচ্ছাসেবক লীগের ১৭ নম্বর সদস্য এবং দ্বাদশ জাতীয় সদস্য নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের শাহীন চাকলাদারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ৮১ নম্বর সদস্য ছিলেন।
এসব সেচ্ছাসেবক লীগ নেতারা বর্তমানে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে বিএনপির নেতাকর্মি পরিচয় দিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা এলাকার সংখ্যালঘু পরিবারের সদস্যরাও। এদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি মহির বিশ্বাস।
সম্প্রতি পাঁজিয়ার ঘের ব্যবসায়ী যুবলীগ নেতা নাজমুল হোসেনের স্ত্রী ফতেমাতুজ জোহরা বিএনপি নেতা মহির বিশ্বাস, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সিন্টু ও কুদ্দুসসহ ৮জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছেন। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও থামছে না তাদের কর্মকান্ড।
এরপর বিএনপি নেতা মহির বিশ্বাস ও সেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা একজোট হয়ে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেয়ার জন্য নাজমুল হোসেনের পরিবারের উপর বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে জানা গেছে। তাদের বর্তমানে মুল টার্গেট হলো আ‘লীগের নেতাকর্মি এবং এলাকার সংখ্যালঘু পরিবার। স্বৈরাচারী আ‘লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পাঁজিয়া এলাকায় নিরব চাঁদাবাজি বেড়েছে।
এসব ব্যাপারে জানতে আব্দুল কুদ্দসের ০১৭৮১ ১৬১০৮১ মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে তার পিতা শতকত ঢালি ফোনটি রিসিভ করেন। তিনি জানান, তার ছেলে কুদ্দুস বিএনপি করে।
বিএনপি নেতা মহির বিশ্বাস বলেন, আমি পাঁজিয়া ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলাম। এরপর দল থেকে পদত্যাগ না করে বিএনপিতে যোগদান করি। এছাড়া সিন্টু, কুদ্দুস, আসাদুল ও রানা এরা কেউ জামায়াত, আ‘লীগ ও বিএনপি করে। নাজমুলের ঘের সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের সাথে বর্তমানে কয়েকটি সালিশ বিচার করেছি মাত্র।
জানতে চাইলে পাঁজিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএ হালিম বলেন, মহির বিশ্বাস ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন। তিনি দল থেকে পদত্যাগ না করে বিএনপিতে এসেছেন। এছাড়া সিন্টু, কুদ্দুস, ও আসাদুল এরা সবাই আওয়ামী
সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মি। এরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের
প্রার্থী শাহীন চাকলাদারের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপিতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও ঘের দখলবাজদের কোনো স্থান নেই। ভুক্তভোগীরা এসব ঘটনায় আমাদের কাছে অভিযোগ করলে আমরা বিষয়গুলি দেখব।