কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি : কেশবপুরে কাঁচা মরিচের খুচরা মূল্য কেজি ৪শ টাকা। একদিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়ে ১৬০ টাকা সবজির দামও দ্বিগুণ। পেঁয়াজের কেজি ১শত ২০ টাকা। আর মাছের বাজারে আগুন দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ। এসব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। বরিবার ১৪ জুলাই সকালে কেশবপুর বড় কাঁচা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কাঁচা মরিচ ৪শত টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে তার পরও আমদানি কম তাই মূল্য বেশি হওয়ায় ক্রেতারা ১/২শ গ্রাম করে ক্রয় করছে কাঁচা মরিচ। এক কেজি কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল গত শুক্রবারে। আদা কেজি ৩০০ টাকা, আড়াইশ গ্রাম ৭৫ টাকা ও একশ গ্রাম ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সুকনা মরিচও একশ গ্রাম ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি একশ টাকা পার হয়ে ১২০ বিক্রি হচ্ছে । কেজির মূল্য বেশি হওয়ায় ২৫০/৫০০শ গ্রাম করে ক্রয় করছে । রসুন ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গোল আলুর কেজি ৬০ টাকা। সবজির বাজার মূল্য দ্বিগুন চড়া। পবিত্র ঈদুল আজহার সময়েও বেগুন ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়ে ছিলো আর এখন বেগুনের কেজি ১২০ টাকা পার হয়েছে, কচুরমুখি ৮০ টাকা, ওল কেজি ১শ টাকা, ওলের ডাটা ৪০ টাকা আঁটি, পটলের কেজি ৪০ টাকা দুদিন আগেও ছিল এখন ২০ টাকা, ভেনডি ৪০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পুইশাকের আঁটি ২৫ টাকা, কচুর লতির আটি ৬০ টাকা, , ঝিঙে ৫০ টাকা, মিষ্টিপল্লা ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ টাকা কেজি, চালকুমড়া ৩০ টাকা, লাউলের পিচ ৪০/৫০ টাকা, খিরাই ৮০ টাকা, কাঁচা পেপে ৩৫ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে। কেশবপুর বড় কাঁচা বাজার ও বৈকালী কাঁচা বাজারের পাশাপাশি গ্রাম অঞ্চলের হাটবাজার গুলোতেও নিত্যপন্যের সাথে কাঁচা সবজি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন যেমন ত্রিমোহীনি বাজার, চিংড়া-সাঁগরদাড়ী, শিকারপুর, মঙ্গলকোট,প্রতাপপুর , মাগুরখালি। পাঁজিয়া, কলাগাছি, কাটাখালি, ভেসচি, গৌরিঘোনা সহ বিভিন্ন বাজারে একই অবস্থা । কেশবপুর কাঁচা বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা সদর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের নুর মোহাম্মদ আলী জানান, বাজারে কাঁচা মরিচ ৪০০ শত টাকা বিক্রি হওয়ায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন পরে তিনি আড়াইশ গ্রাম কাঁচা মরিচ ১শত টাকা দিয়ে ক্রয় করে বাড়িতে ফিরেছেন। কেশবপুর বৈকালী কাঁচা বাজারে সবজি ক্রয় করতে আসা মধ্যকূল গ্রামের নজরুল ইসলাম, সাতবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল হালিম
দৈনিক জন্মভূমির প্রতিনিধি কে বলেন, আমরা গ্রামে বসবাস করলেও আমাদের কাঁচা সবজি কিনতে হয় কারণ গ্রামের কৃষকরা এখন ধান পাটের চাষ করে বেশি সবজি লাভজনক হলেও তারা সবজি চাষ করতে চায়না। যার কারণে বাজারে কাঁচা সবজির আমদানির চেয়ে ক্রেতরা বেশি। ব্যবসায়ী ও চাকুরীজীবিদের মতো কাঁচা সবজির ক্রেতার পাশাপাশি আমরা গ্রামের কৃষকরা কাঁচা সবজি ক্রয় করতে হচ্ছে । বড় কাঁচা বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা আতিয়ার রহমান, আব্দুল জলিল, বিকালে বাজারের কাঁচা খুচরা সবজি বিক্রেতা ওলিয়ার রহমান, আব্দুর রহিম বলেন, বাজারে কাঁচা সবজির আমদানি খুব কম। আমাদের অঞ্চলের কৃষকের লাগানো সবজির ক্ষেত বার বার বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে সবজির কোনো আমদানি নেই। যার কারণে নিত্যপণ্যের চাহিদা বেশি থাকায় খুচর মূল্য বেশি। খুব তাড়াতাড়ি এসকল পন্যের দাম কম হবে না। আমাদের ব্যবসাতো বন্ধ হওয়ার পথে। কাঁচা সবজির আড়ৎদার মশিয়ার রহমান বলেন, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের বাজারে আগুন লাগতে শুরু হয়েছে। অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজের মূল্য অসাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। দেশের ভিতরে কাঁচা মরিচের আমদানি কমে গেছে। ভারতের আমদানিও কম। দেশের যে সব অঞ্চলে কাঁচা সবজির চাষ হয় ঐ সব অঞ্চলে বৃষ্টির কারণে সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কাঁচা সবজির আমদানি অনেক কম হওয়ার কারণে খুচরা বাজারে মূল্য অসাভাবিক ভাবে বেড়েছে। কেশবপুর বড় কাঁচা বাজারের সভাপতি জালাল উদ্দীন বলেন, বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টি হওয়ার ফলে কাঁচা মরিচ সহ সবজির আমদানি কমে গেছে। যার কারণে মরিচ সহ সবজির দাম বৃদ্ধি
পেয়েছে।
মাছের আড়ৎদার ও আড়ৎদার সমিতির সভাপতি আব্দুস হান্নান বিশ্বাস বলেন, মাছের আড়তে আমদানি কম এই সময়ে মাছের ঘেরে কোনো মাছ নেই। এখন ঘেরে মাছের পোনা ছাড়ার সময়। বাইরে থেকে তেমন কোনো মাছের আমদানি হয়না। যে সব মাছ আমদানি হচ্ছে তার দাম অনেক বেশি। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। মাছের খুচরা ব্যবসায়ী আব্দুল আহাদ বলেন, আমাদের অঞ্চলে ঘেরে কোনো মাছ নেই। বাজারে যেসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা সব দক্ষিণাঞ্চল থেকে প্রতিদিন আমদানি করতে হয়। যার কারণে এই সকল মাছ যেমন বাগদা চিংড়ে, নোনা চিংড়ে, চাকা চিংড়ে, রুপোলী ইলিশ, বড়বড় সাইজের থাই তেলাপিয়া, রূপচাঁদা, শিং, মাগুর, বাইনমাছের বাজার মূল্য খুব চড়া। মাছের মূল্য মূল্য চড়া হওয়ার কারণে ক্রেতা শুন্য হওয়ায় অনেক খুচরা ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে। মাছের বাজারে ক্রেতা শুন্য হয়ে পড়েছে। আষাঢ শ্রাবণ মাসে চারিদিকে বৃষ্টির পানিতে খাল বিল সমূহ থৈথৈ করে। এখন আর বিল নেই, সব মাছের ঘেরে ভরে গেছে। মিষ্টি পানির সুস্বাদু মাছ বিলুপ্তর পথে।
কেশবপুরে সবজির দাম দ্বিগুণ: দিশেহারা নিম্ন আয়ের মানুষ

Leave a comment