ডেস্ক রিপোর্ট : ২০১৮ সালের খুলনা সিটি মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে খুলনা প্রথম যুগ্ম জজ আদালতে বিএনপি মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর দায়ের করা মামলার এক তরফা শুনানি শেষ হয়েছে। এ সময়ে তার কাছ থেকে ৫ টি বিষয়ের ওপর লিখিত বক্তব্য নিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে খুলনা প্রথম জজ আদালতের বিচারক মো: খোরশেদ আলম তার লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করে। এ সময়ে আদালত তার কাছে আরও কিছু কাগজপত্র চেয়েছেন। তবে রায় ঘোষণার কার্যদিবস এখনও নির্ধারিত হয়নি। তারিখ পরবর্তীতে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে আইনজীবী গোলাম মাওলা জানান।
নজরুল ইসলাম মঞ্জুর আইনজীবী গোলাম মাওলা বলেন, তৎকালীন আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বিভিন্ন তথ্য গোপন করে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলে। তার বিরুদ্ধে আমরা আপীল করি। কিন্তু সেদিন বিভাগীয় কমিশনার সেটি গ্রহণ না করে তার পক্ষে রায় দেন। পেশী শক্তি খাটিয়ে তারা প্রভাব দেখায়। তখন আইনের কোন শাসন ছিলনা। নির্বাচনের সময়ে বিএনপি’র এজেন্টদের ভোট কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়। সেদিন সাধারণ মানুষকে নির্বাচনে ভোট দিতে দেয়নি তারা। জোর জুলুম করে নেতাকর্মীদের পুলিশে ধরিয়ে দেয় তারা। জোর করে নিজেদের পক্ষে ভোট কেটে নেয়। কেন্দ্রগুলোর নির্বাচনী ফলাফলে কোন প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর ছিলনা। এভাবে তারা সেদিন ভোটে জয় লাভ করে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের ১১ জুন নির্বাচনে গেজেটে যে ফল প্রকাশ করছে সেটি আমরা বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করি। আজকে আদালতে এক তরফা শুনানি ছিল। আদালতে আমরা জবানবন্দি দিয়েছি এবং বাদীর যে সকল কাগজপত্র এক্সিবিটের দরকার ছিল সেগুলো এক্সিবিট হয়ে গেছে। সামনে রায় ঘোষণার একটি তারিখ থাকবে আমরা আশা করছি ওই দিন আদালত আমাদের পক্ষে রায় দিবেন। তবে আদালত এখনও পর্যন্ত কোন দিন ধার্য করেননি। পরবর্তীতে আমাদের জানিয়ে দেবেন আদালত।
জানতে চাইলে বিএনপি’র সাবেক সভাপতি এবং মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ২০১৮ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে নির্বাচনী ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করি। তৎকালীন সরকারের লোকজন কখনও শুনানি করতে দেয়নি। দীর্ঘ ৭ বছর পর জুলাইয়ের বিপ্লবের পর গণতন্ত্রের বিজয়ের পর এ মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। এটা দেওয়ানি মামলা হওয়ায় এর কতগুলো ধাপ আছে। এই ধাপে আমি আমার লিখিত বক্তব্য এফিডেভিটেরের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপন করেছি। সেখানে মূলত ৫ টি বিষয় উল্লেখ করেছি। সেখানে প্রার্থী হিসেবে তালুকদার আব্দুল খালেকের অযোগ্যতা, উনি নির্বাচনী ফর্মে সম্পদের যে তথ্য দিয়েছিলেন সেখানে সঠিক তথ্য গোপন করেন, তার বিরুদ্ধে আপীল করলে বিভাগীয় কমিশনার তার পক্ষ রায় দেন। আদালতে তিনি এর প্রতিকার চেয়েছেন। নির্বাচনী কার্যক্রমে তার কর্মীদের গণ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ৫৩ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সেই প্রতিকার চেয়ে আদলতে আবেদন করেন। এরপরে পোলিং এজেন্ট এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা ও নির্বাচনী উপকরণ ছিনতাই এ বিয়য়ে প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। নির্বাচনের দিনে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে বাক্স ভর্তি করে যে ব্যালট জমা দিয়েছিল তার পেছনে কোন প্রিজাইডিং অফিসারের স্বাক্ষর ছিলনা এবং কোন প্রার্থীর টিপ সই ছিল না। এগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছেন।
এসব আবেদনের পেক্ষিতে আদালতে তিনি বলেছেন ‘আবেদন বিবেচনায় নিয়ে তালুকদার আব্দুল খালেকের বিজয়ের ঘোষণা বাতিল করে দিয়ে আমাকে বিজয় ঘোষণা করার আবেদন করার জন্য এবং আদালত আমার লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। আদালত এর পক্ষে কিছু কাগজপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেগুলো আমরা বিকেলে দাখিল করব। সেগুলো আমরা যোগাড় করছি। তিনি আশাবাদি আদালত সঠিক এবং সাহসী রায় দিবেন। যেহেতু দেশে গণতন্ত্র পুণপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বিচার বিভাগ স্বাধীন। প্রভাবমুক্ত আদালতে তিনি ন্যায় বিচার পাবেন বলেও জানান।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত