শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আর মাত্র বাকী ৮ দিন। এরই মধ্যে প্রচার প্রচারণায় এগিয়ে আছেন সাবেক মেয়র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি অন্যান্য মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বয়োজোষ্ঠ্য হলেও সমগ্র নগরীর ওলি-গলিতে পড়ছে তার পায়ের চিহ্ন। একইভাবে তার প্রতি ওয়ার্ডে প্রচার-প্রচারণার জন্য রয়েছে একাধিক পুরু এবং নারী দল। তালুকদার আব্দুল খালেক আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এবং জনপ্রিতায় শীর্ষে থাকায় নির্বাচনে আবারও জয়লাভের সম্ভাবনা আশা করে কর্মীরা রাতে দিনে পরিশ্রম করছেন।
অন্যদিকে এবারের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল নিজেকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করছেন। তিনি তার কর্মীদের নিয়ে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। নগরীর বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণা করতে। তিনি মনে করেন, খুলনায় চরমোনাই পীরের বহু অনুসারী রয়েছেন। তাদের সমর্থন এবং সক্রিয় ভূমিকায় এবারের নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হবেন। তার কর্মীদের অনেকেরই ধারণা নির্বাচন থেকে দূরে থাকা একটি দলের নিরব সমর্থন তাদের দিকে রয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হলে এবং ভোটার উৎসবমূখরতার মধ্য দিয়ে কেন্দ্রে এলে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এসএম শফিকুল ইসলাম মধু লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত আছেন। তার দাবি খুলনায় যত উল্লেখযোাগ্য উন্নয়ন হয়েছে সবই জাতীয় পার্টির অবদান। সে কারণে খুলনার মানুষ পল্লীবন্ধু হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদের কথা মনে করে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিবেন। তিনিও নিজেকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাবি করছেন। নগরীর ওলি-গলিতে লাঙ্গল প্রতীকের প্রচার পত্র হাতে তার কর্মীদের ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে।
জাকের পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এসএম সাব্বির হোসেন তার গোলাপফুল প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত আছেন। তবে তার কর্মীদের সংখ্যা অন্য প্রার্থীদের চেয়ে কম হলেও খুবই পরিশ্রমী। তারা দিনে রাতে নগরীর ওলি-গলিতে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত থাকেন। তিনি মনে করেন নির্বাচনে উল্লোখযোগ্য ভোট লাভ করবেন। তিনিও বিজয় ছিনিয়ে নিতে চান।
অপরদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রার্থীতা ফিরে পেয়ে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এমএম শফিকুর রহমান মুশফিক। তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের একটা বড় অংশ তাকে ভোট দিবেন বলে তিনি আশা করছেন। তার সমর্থকরা মনে করেন, খুলনা নগরীর একটি বিশেষ অংশ তাকে নেপথ্যে থেকে সমর্থন দিয়ে চলেছে। এসব কারণে তিনি মনে করেন ব্যাটে-বলে মিলে গেলে একটা ঘটনা ঘটেও যেতে পারে।
খুলনার নাগরীক নেতা এড. বাবুল হাওলাদার বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক প্রচার-প্রচারণায় এগিয়ে আছেন।
খুলনা উকিলবারের সিনিয়র আইনজীবী এড. লিয়াকত আলী মোল্যা বলেন, প্রচার-প্রচারণায় তালুকদার আব্দুল খালেক অন্য মেয়র প্রার্থীদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন। তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি আশরাফ উজ-জামান বলেন, মাঠে তেমন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক এগিয়ে আছেন।
আর মাত্র আটদিন পরেই সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজয়ের মুকুট মাথায় নিয়ে কে হবেন নগর পিতা এ অপেক্ষায় আছেন নগরবাসী। আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন পুরুষ এবং ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী ভোটার রয়েছেন। ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়ে তারাই ঠিক করবেন তাদের নগরপিতা।