ইভিএম মেশিনে ফল পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই
শেখ আব্দুল হামিদ : ইভিএম’এ নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তনের কোন সুযোগ নেই। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় রাখতে যাকিছু পয়োজন করা হবে। নির্বাচনে কেউ বিজয়ী হবেন আবার কেউ পরাজিত হবেন। পরাজিতকে হাসিমুখে পরাজয় মেনে নিতে হবে। নির্বাচনের সাংস্কৃতিক পরিবেশ এমন হওয়া উচিৎ। নির্বাচনটা নিয়ন্ত্রণ করবো আমি। নির্বাচনের আচরণ প্রতিপালন করার দায়িত্ব প্রার্থীদের। প্রতিপালন না হলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তিরা ব্যবস্থা নিবেন। আমাদের দেশে এখনও নির্বাচনী সংস্কৃতিতে সুস্থ ধারাটা প্রত্যাশিত মাত্রায় গড়ে ওঠে নাই। পোষ্টার লেমিনেটিং করার অনুমোদন দিতে পারব না। প্রাথমিক ভাবে এটা আইনে নিসিদ্ধ আছে। প্লাস্টিক বর্জ্য পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। যে সব প্রার্থীর ভোটারদের উপর আস্থা নেই তারা ভোটে দাঁড়াতে গেলেন কেন। ভোটারদের যদি কেউ ভোটদানে বাঁধা প্রদান করে আমাদের জানাবেন। কোন অবস্থায় ভোটারকে ভোট দিতে বাধা প্রদান করা যাবে না। ইভিএম মেশিন দিয়ে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই। যদি প্রমানসহ কেউ আদালতে যেতে পারেন এবং প্রমান করতে পারেন ইভিএমটা প্রতারণার মেশিন, তাহলে আদালতের সিদ্ধান্ত অবশ্যই মেনে নিব। সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে কেন্দ্রীয় ভাবে নির্বাচন মনিটরিং করা হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, আপনাদের বলতে চাই নির্বাচন কমিশন কিন্তু কঠোর অবস্থানে থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ করবে। আমরা শৈথিল্য প্রদর্শন করবো না। নির্বাচন নির্বাচনই। প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, নির্বাচন হলো ভোটাধিকার প্রয়োগ। নির্বাচনটা আপনার অধিকার নয়, নির্বাচনটা ভোটারের ভোটাধিকার। যিনি নির্বাচিত হবেন তার অধিকার না। কে প্রার্থী সেটা আমরা দেখবো না। আমারা দেখবো ভোটারের ভোটাধিকার খর্বকরা হচ্ছে কিনা। ভোটের ফলাফলের পরেই বুঝা যাাবে নির্বাচন কমিশনের সামর্থ্য কতটুকু। তিনি গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কথা তুলে ধরে বলেন, মেশিনে রেজাল্ট পরিবর্তন করা কোন ভাবেই সম্ভব না। তাহলে ক্ষুব্ধ প্রার্থী অবশ্যই আদালতে যেতেন। কেউই যাননি। মনে রাখবেন নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকবে। নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ উৎসবমুখর হতে হবে এবং এখানে আমাদের পক্ষ থেকে তথা সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকবে কোন রকম পক্ষপাতিত্ব করবেন না। ভোটের দিন সবাই সক্রিয় হবেন। প্রতি বুথে আপনারা পোলিং এজেন্ট রাখাটা নিশ্চিত করবেন।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো: জিল্লুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: আহসান হাবিব খান (অব:) ও নির্বাচন কমিশন সচিব মো: জাহাংগীর আলম। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন, রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান ভূঁঞা, খুলনা রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি মো. মইনুল হক, খুলনার পুলিশ সুপার মো. মাহাবুব হাসানসহ ১০ জন রিটার্নিং অফিসার।
মতবিনিময় সভায় মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন, আওয়ামীলীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক, জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু, ইসলামী আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো: আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী এসএম সাব্বির আহম্মেদ ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান। এসময় নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডের ১৩৪ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর অনেকেই উপস্থিত থেকে বক্তৃতায় তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন।