ঋণের টাকায় নির্বাচন, চারজনের মনোনয়ন প্রত্যাহার
এম সাইফুল ইসলাম : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষদের সাথে দু’জন নারী প্রার্থী কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দু’জনই জাতীয় পার্টি (জেপি)র আলাদা আলাদা ইউনিটে দায়িত্ব পালন করছেন।
সূত্রে জানা যায়, এবারের নির্বাচনে মোট ছয়জন নারী প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে শেষ মুহূর্তে চারজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। যার ফলে ভোটের যুদ্ধে মাঠে থাকছেন দুই নারী প্রার্থী। তারা হলেন ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের রোজিনা শেখ আয়শা ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদা বেগম। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তাহেরা খাতুন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মুক্তা বেগম, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোছা. নাজমুন্নাহার ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হোসনে আরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রোজিনা শেখ আয়শার বয়স ৩২ বছর। এখনো বিয়ে করেননি, স্ব-শিক্ষিত। তাঁর ঘরোয়া ব্যবসা রয়েছে। ওই ব্যবসা থেকে বছরে তিনি আয় করেন দেড় লাখ টাকা। এ ছাড়া একতলা একটি বাড়ি রয়েছে তাঁর। আর নগদ টাকা রয়েছে ৩০ হাজার। এর বাইরে হলফনামায় তিনি আর কোনো সম্পদের বিবরণ দেননি। রোজিনা শেখ নির্বাচনে খরচ করতে চান ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে তিনি নিজের ব্যবসা থেকে আয় করা ২০ হাজার টাকা খরচ করবেন। ভাইয়ের কাছ থেকে ধার নেবেন ২৫ হাজার টাকা। মামার কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান পাবেন ২৫ হাজার টাকা। আত্মীয়-স্বজনের বাইরে অন্য ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নেবেন ২০ হাজার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে পাবেন ৩০ হাজার টাকা।
রোজিনা শেখ আয়শা বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারী। তিনি যদি পুরো দেশ চালাতে পারেন, তাহলে আমি কেন একটি ওয়ার্ড চালাতে পারব না। সংরক্ষিত ওয়ার্ড তিনটি সাধারণ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত হয়। সেখানে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এ কারণে আমি সাধারণ ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করছি। নির্বাচনের ব্যাপারে এলাকার সবাই বেশ ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। সেই সাথে উৎসাহও দিচ্ছেন। পুরুষদের পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে জানান রোজিনা শেখ।
৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী ফরিদা বেগমের বয়স ৫১ বছর। তিনি গৃহিনী, অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। তার নগদ টাকা রয়েছে ৫০ হাজার, আর ব্যাংকে রয়েছে ১০ হাজার। তিনি নির্বাচনে খরচ করতে চান দুই লাখ টাকা। এর মধ্যে নিজের ব্যবসা থেকে খরচ করবেন ১০ হাজার টাকা, এক ছেলে ধার হিসেবে দেবেন ৫ হাজার টাকা ও আরেক ছেলে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে দিবেন ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ফরিদা বেগম বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনে আসা আমার। নিজের কারণেই নারীদের অবহেলার চোখে দেখে মানুষ, কম গুরুত্ব দেয়। সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতেই সাধারণ কাউন্সিলর পদে অন্য পুরুষদের সঙ্গে নির্বাচন করছি। আমার মনে হয় প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে এভাবে একাধিক নারীকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করা উচিত।