
এম সাইফুল ইসলাম : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের পূর্বদিকে ১০, ১২ ও ১৫নং ওয়ার্ড, পশ্চিমে দেয়ানা রায়েরমহল বাজার, উত্তরে বিজিবি ক্যাম্প এবং দক্ষিণে রয়েছে বয়রা জংশন ক্রস রোড।
নানা সমস্যায় জর্জরিত এই ওয়ার্ড। তবে মূল সমস্যা জলাবদ্ধতা। বছরের অধিকাংশ সময়ে থাকে জলাবদ্ধ থাকে। আর বর্ষাকালেতো কোন কথাই নেই। জলাবদ্ধতার কারণে ওয়ার্ডেও বাস্তুহারা এলাকার প্রায় সকলের চর্মরোগসগ পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত। ওয়ার্ডের বাস্তুহারা এলাকার পানিনিষ্কাশনের খালটি বন্ধ। অন্য এলাকার পানি এসে জমা হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। এই ওয়ার্ড থেকে আরও কয়েকটি ওয়ার্ডের পানি বের হয়। কিন্তু বছরজুড়েই পলিথিন আটকে থাকতে দেখা যায়। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়া ওয়ার্ডে কোনো খেলার মাঠ নেই, নেই কোনো গ্রন্থাগার বা ব্যায়ামাগার।
এ ওয়ার্ডে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন বর্তমান কাউন্সিলর এমডি মাহ্ফুজুর রহমান লিটন, ব্যবসায়ী শেখ ফেরদৌস আমিনুল হক ও কাজী সারওয়ার উল আজম মানু।
সড়কবাতি স্বল্পতা, সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা সেবা থেকে বঞ্চিত, মাদকের বিস্তার এবং জলাবদ্ধতাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত বলে মনে করেন আসন্ন কেসিসি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। যদিও বর্তমান কাউন্সিলরের দাবি মনে করেন তিনি তার নির্বাচনী ওয়াদার প্রায় শতভাগই পূরণ করেছেন। তবে অভিযোগ আছে, বর্তমান কাউন্সিলর ঠিকাদার হওয়ায় ওয়ার্ডের অনেক কাজ তিনি নিজেই করেন।
বয়রা এলাকার বাসিন্দা মিরাজ হোসাইন বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। আগে ড্রেন ছিল না, তবে রাস্তায় হাঁটা যেত। এখন ড্রেন উঁচু হওয়ায় রাস্তা হয়ে গেছে ড্রেন। আবার ড্রেন যথাসময়ে পরিষ্কার করা হয় না। রাস্তাঘাট একেবারে গ্রামের রাস্তার চেয়ে খারাপ। এলাকায় সড়কবাতি নেই বললেই চলে।’
ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহ্ফুজুর রহমান লিটন জানান, ওয়ার্ডবাসীর সেবা দিতে আমি বদ্ধপরিকর ছিলাম, দিয়ে যাচ্ছি। গত নির্বাচনে এলাকাবাসীকে দেয়া আমার প্রতিশ্র”তির প্রায় পুরোটাই করতে পেরেছি। আমি এ ওয়ার্ডকে একটি শান্তিপূর্ণ ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলাম। তা পেরেছি। এ ওয়ার্ডে মাদক অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ডে অবকাঠামো উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে। ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়কই সংস্কার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও মাদক নিয়ন্ত্রনে কাজ করেছি যা নিয়ে সন্তষ্ট ওয়ার্ডবাসী।
সাবেক কাউন্সিলর কাজী সারওয়ার উল আজম মানু। বিশ বছর ধরে এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর ছিলেন। এবারো ঘোষণা দিয়েছেন নির্বাচনের। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, আমি দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলাম। জনগন যদি চায়, ফের প্রার্থী হতে পারি। তবে হনগনের মতামতের ওপরই নির্ভর করছে আগামি নির্বাচন।
প্রার্থী শেখ ফেরদৌস আমিনুল হক বলেন, দীর্ঘদিনের প্রবাস জীবন শেষে এখন প্রায় ১৫ বছর ধরে আমি এই ওয়ার্ডে নিজের বাসায় বসবাস করছি। আমি দেখেছি একটু বৃষ্টি হলেই বাস্তুহারা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এছাড়া এলাকার তরুণদের প্রয়োজন-কল্যাণে এখনো কিছু কাজ বাকি। ওয়ার্ডের অনেকের চাওয়া-পাওয়া আমি এবারের কাউন্সিলর নির্বাচন করি, তারা নতুন কাউকে পেতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে ধারণ করে চলি সবসময় ও মানুষের বিপদে-আপদে পাশে থাকি। ওয়ার্ডের সকল সমস্যা নিরসনে সচেষ্ট থাকবো পাশাপাশি ৯ নং ওয়ার্ডকে “মডেল ওয়ার্ড” হিসাবে গঠনে যা যা প্রয়োজন করবো।