জন্মভূমি রিপোর্ট : কাঠ পোড়ানোর প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে প্রতিবছর মৌসুম শুরু হলেই কোটচাঁদপুর উপজেলার ইট ভাটা মালিকরা। এ উপজেলায় প্রতিটি ভাটায় প্রতিদিন একশত পন্চাশ মন থেকে তিনশত মণ পর্যন্ত কাঠ পোড়ানো হয়।স্থায়ী বা অস্থায়ী চিমনির ভাটায় অবাধে পুড়ছে কাঠ। কোটচাঁদপুর উপজেলার ইট ভাটা মালিকরা দুয়েক জন সরকারি আইন মেনে কয়লা দিয়ে ইট পোড়ালেও অধিকাংশ ইট ভাটা মালিকরা সরকারি ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন আইন না মেনে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব ইট ভাটায় জ্বালানী হিসেবে প্রতিনিয়ত পোড়ানো হচ্ছে কাঠ বা কাঠের গুড়ি। এব্যাপারে ভাটার একজন ম্যানেজারের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ইট ভাটা মালিকরা সরকারি বিধি নিষেধ না মেনে কয়লার পরিবর্তে কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে কেন? উত্তরে তিনি বলেন, কয়লা দিয়ে ইট পুড়ালে খরচ অনেক বেশি হয় যা কাঠের থেকে দ্বিগুণ। এজন্য ভাটা মালিকরা কয়লার পরিবর্তে কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে থাকে । ভাটার নির্গত কালো ধোঁয়া দূষিত করছে চারপাশের পরিবেশ। উজাড় হচ্ছে বনজ ও ঔষধি সহ বিভিন্ন সবুজ বনায়ন । বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি, পরিবেশ দূষনের ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী শিশু সহ বৃদ্ধ বয়সী অধিকাংশ মানুষ। ইট ভাটার পাশের একজন চাষী খুব কান্নাভরা কন্ঠে এ প্রতিবেদেক বলেন, ইট ভাটার পাশে আমার জমি হওয়ার ঠিকমতো ফসল হয় না। কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন ইট ভাটার লোকেদের অত্যাচার আর কালো ছায়ে ফসল কালো রং ধারন করে। যার ফলে ফসল নষ্ট হয়ে যায়। ইট ভাটাগুলোর দিকে তাকালে বুঝা যাচ্ছে দেশে কোনো নিয়মনীতি নেই। থাকলেও ওরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দেদার্ছে পুড়ায় কাঠ। প্রসাশনের নিরাবতা আর পরিবেশ অধিদপ্তরের তদারকি না থাকায় ইট ভাটার মালিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে জানালেন একজন জনপ্রতিনিধি। কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুর ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙ্গা ( মকছেদ মোড়) রিপন বিক্সে পরিবেশ অধিদপ্তর ২০২০ সালে একবার অভিযান পরিচালনা করে একলাখ জরিমানা করে। তার পর আর কোনো অভিযান আমাদের চোখে দেখা মেলেনি বলে জানায় ইট ভাটা এলাকার মানুষ। এব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে একজন কর্মকর্তা জানান আমি অফিসে নেই বলে ফোনের কলটি কেটে দেয়। এলাকার মানুষের দাবি প্রসাশন ও পরিবেশ অধিদপ্তর যদি ঠিকমতো তদারকি করে তাহলে ইট ভাটাগুলোতে এভাবে দেদার্ছে পুড়াতে পারবেনা কাঠের গুঁড়ি ও কাঠ খড়ি। যেমন রক্ষা পাবে দেশের সবুজ বনায়ন তেমনি উন্নত হবে এলাকার পরিবেশ।