জন্মভূমি ডেস্ক : ড্রাগন ফলকে পিটায়া (Pitaya) ফল ও বলা হয়। এটি দক্ষিন আমেরিকার জংলে জন্ম নেয়া একধরনের লতানো ক্যাকটাস গাছের ফল। প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করে কোটচাঁদপুরের এক দুজন চাষী । ড্রাগন ফলের চাষের জন্য কোটচাঁদপুরের আবহাওয়া এবং মাটি উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ড্রাগন ফলের চাষ । এরই ধারাবাহিকতায়
কোটচাঁদপুর এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগন চাষ করে সফল হয়েছেন অনেক চাষিরা। কয়েক বছর আগেও শাকসবজির এলাকা ছিলো ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর। বাপদাদার দির্ঘদিনের পুরাতন চাষ শাকসবজি চাষ ছেড়ে ড্রাগন চাষ শুরু করেন কোটচাঁদপুর এলাকার চাষিরা। ফলন বেশ ভালো হয় রোগ বালাই কম অধিক মুনাফার আশায় অন্যান্য চাষ ছেড়ে ড্রাগন চাষে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে কোটচাঁদপুরের মানুষ। এরই মধ্যে এই ফল বিক্রি করে তারা আয় করছে লাখ লাখ টাকা । কোটচাঁদপুর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগন চাষ করে বেকারদের স্বাবলম্বী হওয়ার অপার সম্ভাবনার দার খুলেছে বলে জানালেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। কোটচাঁদপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটি ইউনিয়নে ( সাফদার পুর, দোড়া, ও বলুহর) ড্রাগন বাগান অনেক বেশি। এতিনটি ইউনিয়নের প্রায় সব গ্রামের কৃষকরা তাদের বাড়ির আশেপাশের পতিত জমি গুলো ফেলে না রেখে ড্রাগন বাগান বানিয়ে বাড়তি টাকা আয় করছে । জমি তৈরি করে ড্রাগন চারা রোপনের ১০ মাসেই ফুল আসে বাগানে। সরেজমিন ড্রাগন ফল বাগানে কথা হয় লক্ষ্মীকুন্ডু গ্রামের সামাউল লস্করের সঙ্গে। তিনি জানান, তার ড্রাগন ফল চাষ করার শুরুর কথা, বর্তমান অবস্থা এবং তার স্বপ্নের কথা। তিনি জানান, অত্র এলাকায় অন্যান্য চাষিদের পাশাপাশি তিনিও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু করেন ড্রাগন চাষ । বাজারে ভালো দাম ও চাহিদা থাকায় দিন দিন বাড়ছে এ ফলের কদর। সামাউল লস্কর আরও জানান, অনেকেই আসে পরামর্শ নিতে। এপ্রিলে ফুল আসে, এরপর জুনের প্রথম সপ্তাহে ফল। ডিসেম্বর পর্যন্ত টানা সাত মাস ফল পাওয়া যায়।কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিবুল হাসান ও কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন এ প্রতিবেদক কে বলেন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কোটচাঁদপুর উপজেলার ড্রাগন ফলের আবাদ হয়েছে ৩০০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় ৪৫ টন। কোটচাঁদপুর উপজেলায় ৩৪ হাজার কৃষক পরিবারের বসত। যার মধ্যে ১০০০-১২০০ জন কৃষক ড্রাগন চাষের সাথে সম্পৃক্ত । তিনি নিয়মিত বাগানের খোঁজখবর এবং পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। তিনি আরও জানান, চাষিদের বাগানেরএকটি ড্রাগন ফলের ওজন ৩০০ গ্রাম থেকে প্রায় ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদিকে আরেকজন ড্রাগন চাষি বালিয়া ডাঙ্গার জুলফিকার আলীকে জিগ্যেস করলে তিনি বলেন। আমি কয়েক বিঘা জমিন আম বাগান করেছিলাম কিন্তু ভালো লাভবান না হতে পেরে আম বাগান উঠিয়ে এখন ড্রাগন বাগান করে অনেক ভালো আছি।
কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আব্দুর রশীদের কাছে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে বলেন, অধিক পুষ্টি গুণসম্পন্ন এ ফল চোখকে সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, রক্তের কোলেস্টরেল কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ফল চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত