জন্মভূমি ডেস্ক : শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে শঙ্কা কাটছে না চিকিৎসকদের। নতুন করে শারীরিক সমস্যা তৈরি হওয়ায় আবারও তাকে বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা। অবশ্য এরইমধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে পাঠাতে আবারও সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন হাসপাতালে প্রায় এক মাস ধরে থাকার কারণে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা। সুনির্দিষ্ট করে কোনো তথ্যও পাচ্ছেন না তারা। অবশ্য চিকিৎসকদের পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে ছুটছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অন্যদিকে লন্ডন থেকে বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন খালেদা জিয়ার।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, লিভার ও কিডনি সমস্যা আরও জটিল হওয়ায় খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে তারাও শঙ্কিত।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর লিভারের জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় পেটে পানি জমে যাচ্ছে। তার কিডনি ও হৃদ্যন্ত্রের সমস্যাও জটিল হচ্ছে। এমন অবস্থায় খালেদা জিয়াকে ‘নিবিড় পর্যবেক্ষণে’ রাখা হয়েছে।
এদিকে জাহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশে সম্ভাব্য চিকিৎসা যা আছে, চিকিৎসকেরা তার সর্বোচ্চটাই খালেদা জিয়াকে দিয়েছেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর বিকল্প নেই।
জাহিদ হোসেন জানান, খালেদা জিয়া কবে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরতে পারবেন, এ মুহূর্তে চিকিৎসকেরা তা বলতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এর আগেও গত ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় পাঁচ দিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।
গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্রোগে ভুগছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন চিকিৎসক ঢাকা মেইলকে বলেন, এক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, ধীরে ধীরে অন্য সমস্যা শুরু হচ্ছে। ফলে চিকিৎসা চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। এখন বিদেশে নেওয়ার পাশাপাশি দোয়া করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ চেয়ারপারসনের যে ধরণের চিকিৎসা দরকার তা দেশে নেই।
বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর অনুমতি চেয়ে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন দুই দিন আগে। এই আবেদনে তার স্থায়ীভাবে মুক্তি চাওয়া হয়েছে।
অবশ্য এর আগে একাধিকবার আবেদন করলেও তা আমলে নেয়নি সরকার।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আবেদনটি তিনি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন।
আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন তিনি পেয়েছেন। এখন আইনগত বিষয় পর্যালোচনা করে অল্প সময়ের মধ্যে আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে হঠাৎ করে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে ফিরলেও পরে এ নিয়ে কোনো কথা বলেননি।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত