খুবি প্রতিনিধি: আম পাড়াকে কেন্দ্র করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষক হাসান মাহমুদ সাকিকে লাঞ্ছনার ঘটনায় দায়ের হওয়া ‘হত্যাচেষ্টা’র মামলাটি নিয়ে সমালোচনা চলছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমানের ৩ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ।
শনিবার (১৬) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হরিণটানা থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ খায়রুল বাশার বিষয়টি প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন। এর আগে, মঙ্গলবার (১৩ মে) রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
হত্যাচেস্টার মামলা অতিরঞ্জিত হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইশরিয়াক কবির বলেন, ২০–৩০ জনকে নিয়ে কেউ হত্যা করতে আসে না। তার হাতে কোন অস্ত্র ছিলো না। হয়তো তাৎক্ষণিক মেজাজ হারিয়ে এমন করেছে। তবে তদন্ত করে দেখতে হবে ব্যক্তিগত কোন শত্রুতা আছে কিনা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এসএম মাহবুবুর রহমান বলেন, রিমান্ডের বিষয় আমরা জানিনা, আমরা তো রিমান্ডের জন্য বলিনি। আমরা হত্যা চেষ্টা সংক্রান্ত ৩০৭ ধারাটি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে একটি চিঠি দিয়েছি।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী মো. তাসবি হাসান বলেন, “নোমানের কাজ দণ্ডনীয়। কিন্তু প্রশাসন যেটা করেছে সেটা করেছে অতিরঞ্জিত। এটাকে ‘হত্যাচেষ্টা’ বলা বাড়াবাড়ি।”
এ বিষয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী মিনা মিজানুর রহমান বলেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নোমানকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। আগামীকাল আদালতে এ বিষয়ে শুনানি হবে।তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৩০৭ ধারাটি (হত্যাচেষ্টার অভিযোগ) প্রত্যাহারের জন্য একটি চিঠি দিয়েছে ঠিকই, তবে এখন বিষয়টি তদন্তাধীন। মামলা এখন তদন্তাধীন অবস্থায় আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে নয়। তদন্তে যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তাহলে চার্জশিট দাখিল হবে।
এর আগে ২ মে (শুক্রবার) বিকেলে আম পাড়ার দায়ে ৪ শিক্ষার্থীকে চোর সাব্যস্ত করার অভিযোগ ওঠে । এরপর সন্ধ্যায় প্রতিবাদ জানাতে ২৫–৩০ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আম পাড়তে যান। সেখানে ভুক্তভোগীি শিক্ষক হাসান মাহমুদ সাকি লাঞ্ছনার শিকার হন।
ঘটনার দিন রাতেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তিন দফা দাবি জানায় এরপর বিকালে সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার, ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং তার স্নাতক সনদ সাময়িক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ‘অ্যাটেম্পট টু মার্ডার’ ধারায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়।