জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্তর থেকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স চালকদের সাথে এক নবজাতকের স্বজনদের বাক-বিতণ্ডার মধ্যে শিশুটিকে দুর্বৃত্ত চক্র চুরি করে চম্পট দেয়। ঘটনার পর এক দিন পেরিয়ে গেলেও নবজাতককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার রাত ৮ টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে এ ঘটনায় মামলা দায়ের না হলেও প্রক্রিয়া চলছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। অন্যদিকে, র্যাব-৬ সদস্যরা ঘটনার পর হাসপাতালের সামনের সড়কের দুই ওষুধ ব্যবসায়ীকে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক করেন। তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৬) এর লেফটেনেন্টে কর্ণেল মো: সারোয়ার হুসাইন গত রাত ৯ টার দিকে দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, আটক হওয়া আবিদ মেডিকেল হলের প্রবীর এবং গাজীরহাট ফার্মেসির ইমন নামে দুই ওষুধ ব্যবসায়ী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নবজাতক চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অজ্ঞাত ওই নারীর অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে। শিশুটিকে উদ্ধার এবং অপরাধ চক্রের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
ফকিরহাট উপজেলার পিলজং এলাকার বাসিন্দা দিনমজুর তোরাব আলীর অন্তসত্তা স্ত্রী রানী বেগম (৩৫) মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে খুমেক হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ভর্তি হন। দুপুর পৌনে একটার দিকে তিনি এক পুত্র সন্তান প্রসব করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৫ টার দিকে নবজাতক এবং প্রসুতি মাকে নিয়ে স্বজনেরা বাড়ী ফেরার জন্য একটি বেসরকারি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার চেষ্টা করেন। কিন্তু যে এ্যাম্বুলেন্সটি তারা ভাড়া করেন, চালক সেটি না এনে একটি নিম্নমানের এ্যাম্বুলেন্সে তাদের নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এই নিয়ে চালক উজ্জলের সাথে নবজাতকের পিতার বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ওই এ্যম্বুলেন্স চালকের সাথে আরও কয়েকজন যোগ দেন। ওই পরিবারের সদস্য এবং স্বজনদের সাথে তারা মৃদু সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। শিশুটি তখন তার খালা সোনিয়ার কোলে ছিল। ওই পরিস্থিতির মধ্যে কালো রঙের বোরখা পরিহিত অজ্ঞাত এক নারী তাকে বলেন-গ্যানজাম ঠ্যাকান না কেন? শিশুটিকে আমার কাছে দেন। এরপরই সে নবজাতককে কোলে নিয়ে পালিয়ে যায়। বিভিন্ন সূত্র থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এদিকে, সোনাডাঙ্গা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো: নাহিদ হোসেন মৃধা দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, ভিকটিম পরিবারের পক্ষ হতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সূত্র খুঁজে পেতে বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলা হয়েছে, তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। শিশুটিকে উদ্ধার এবং অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।