জন্মভূমি রিপোর্ট : নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা ও জেলার রূপসা উপজেলায় রোববার গভীর রাতে দুই জন খুন হয়েছেন। রূপসায় আততায়ীর গুলি ও ধাঁরালো অস্ত্রাঘাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার মোঃ রনি ওরফে কালা রনি (৩৬) এক ডজন মামলার আসামি ছিলেন। শহরের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মধ্যে অন্যতম গ্রেনেড বাবুর সাথে তার গভীর সখ্যতা ছিল। সোনাডাঙ্গায় খুন হওয়া মোঃ গোলাম হোসেনের (২৪) কোনো নির্দিষ্ট পেশা ছিল না। তিনি যখন যে কাজ পেতেন, তাই করতেন। তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। থানা পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
রূপসার শ্রীফলতলা ইউনিয়নের মোছাব্বারপুর গ্রামে খুন হওয়া রনি এক সময় সপরিবারে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ভাড়া বাসায় বসত করতেন। গত কয়েক বছর আগে তারা ওই গ্রামে বাড়ী করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। গত ২০১৭ সালে রনির একমাত্র ভাই রকিও সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শ্রীফলতলা পুলিশ ক্যাম্পের (আইসি) এসআই কাজী মোঃ হাসান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, রোববার রাত ৮ টার দিকে রনির তিন বন্ধু তার বাড়ীতে আসেন। এরপর পৌনে ৯ টার দিকে তাদের সাথে রনিও বাইরে বের হন। রাত গভীর হলেও তার খোঁজ না মেলায় পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধানে বের হন। তারা ওই এলাকার জনৈক সৈয়দ মাহমুদের বাড়ীর পাশে ফাঁকা মাঠে ভিকটিমের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।
(আইসি) বলেন, রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের মাথার পেছনে একটি গুলি করা হয়েছে। পিঠে ধাঁরালো অস্ত্রেও একাধিক জখমের ক্ষত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে নাইনএমএম পিস্তলের একটি গুলির খোঁসা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ সোমবার বিকেলে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি অস্ত্র আইনেসহ বিভিন্ন ফৌজদারী অপরাধের অভিযোগে মোট ১২ টি মামলার আসামি ছিলেন বলে ওই পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কেউ আটক হয়নি। থানায় মামলা দায়ের হয়নি।
এদিকে, নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার এমএবারী রোডস্থ ডেল্টা টাওয়ারের পেছনের একটি চানাচুর ফ্যাক্টরির সামনে ফাঁকা জায়গায় মোঃ গোলাম হোসেন (২৪) কে আততায়ীরা পেটে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে পুলিশ জানায়, রাত ১২ টার দিকে গোলাম হোসেনের ওপর ৫/৬ জন সন্ত্রাসী হামলা করে। তাদের মধ্যকার এক অথবা দু’ জন তাকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। এরপর তিন জন তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ১ টা ২৫ মিনিটে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে এক জোড়া স্যান্ডেল ছাড়া আলামত হিসেবে অন্য কিছু জব্দ করা সম্ভব হয়নি।
সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, ময়না তদন্ত শেষে লাশ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মাদক কারবারে বাধা দেবার কারণে তিনি খুন হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ওই রাতে হাসপাতাল থেকে ২২/২৩ বছর বয়সী হাসান নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। খুনের সাথে জড়িতদের সম্পর্কে জেনে গ্রেফতারের চেষ্টায় আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
খুলনায় এক রাতে দুই খুন, আটক ১

Leave a comment