জন্মভূমি রিপোর্ট : নগরীর হরিণটানা ও জেলার রূপসা উপজেলা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এক ঘন্টার ব্যবধানে দুই জন খুন হয়েছেন। জখম হয়েছেন দুই জন। এদের মধ্যকার বালু ব্যবসায়ী বাবলু দত্তকে ঘাতকেরা জবাই করে হত্যা করেছে। আরেক জন সাব্বির একটি সন্ত্রাসী দলের সদস্য। প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী দলের ক্যাডারদের গুলিতে তিনি খুন হয়েছেন বলে পুলিশের বিশেষ শাখার এক কর্মকর্তা প্রাথমিকভাবে তথ্য পেয়েছেন। শুক্রবার বিকেল ৪ টা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে কেউ আটক কিংবা গ্রেফতার হয়নি।
থানা পুলিশ জানায়, নিহত সাব্বির খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অন্যতম ও মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের একজন গ্রেনেড বাবুর সহযোগী। আহত কাউয়া মিরাজও একই গ্রুপের। সে নগরীর নার্গিস মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চিকিৎসা নিয়ে পালিয়েছে। আরেকজন গুলিবিদ্ধ সাদ্দামকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখাকালে পুলিশ তার অবস্থান এবং অবস্থা সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। প্রতিপক্ষ আশিক গ্রুপের সাথে দ্বন্দের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে।
হরিণটানা থানাধীন রাজবন্ধ দক্ষিণ পাড়া এলাকার বাসিন্দা বাবলু দত্ত (৫০) বালু ও জমি কেনা-বেঁচার ব্যবসা করতেন। কাজ শেষে রাত ৮ টার দিকে তিনি বাড়ী ফিরছিলেন। পথে ওৎ পেতে ছিলেন কয়েকজন আততায়ী। তারা নিহতের বসবাসের এলাকাতেই তার মোটর সাইকেলের গতিরোধ করে। তখন তারা ভিকটিমকে জিম্মি করে ফাঁকা একটি প্লট জমির মধ্যে নিয়ে যায় এবং ধাঁরালো অস্ত্রাঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মোিডকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
হরিণটানা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ খায়রুল বাশার দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের পোষাক ব্যতিত অন্য কোনো উল্লেখযোগ্য আলামত জব্দ হয়নি। ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার দুপুরে মরদেহ নিহতের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘাতকদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধাঁরালো অস্ত্র উদ্ধারের চষ্টা চলছে।
পুলিশ জানায়, রাত ৯ টার দিকে রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকার পপুলার পাট গুদাম সংলগ্ন এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী সোহাগের বাড়ীতে শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর অনুসারী একদল দুর্বৃত্ত অবস্থান করছিলেন। এ খবর টের পেয়ে অপর পক্ষ শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিক গ্রুপের ক্যাডাররা তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। তখন গোলাগুলিতে সাব্বির নামে একজন ঘটনাস্থলে নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন সাদ্দাম নামে আরেকজন। তাকে পুলিশ পৌছাবার আগে খুমেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, ঢাকায় রেফাডর্ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে সাব্বিরের লাশ উদ্ধার হয়। কাউয়া মিরাজ নামে আরেকজন আংশিক জখম হয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
রূপসা থানার অফিসার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে পিস্তলের ছয়টি গুলির খোসা ও চারটি তাজা গুলি উদ্ধার হয়েছে। চারটি ইয়াবা ট্যবলেট এবং মাদক সেবনের কিছু সরঞ্জামও জব্দ হয়। পাওয়া যায় গ্রেনেড বোমা সাদৃশ্য একটি বস্তু। যেটা নিষ্কৃয় করতে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাৎক্ষনিকভাবে র্যাবের বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে অবগত করা হয়। এর মধ্যেই পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডি’র একটি টিম সেটাকে নকল বিস্ফোরক দ্রব্য হিসেবে শনাক্ত করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে থানা পুলিশ লাশের ময়না তদন্ত সংশ্লিষ্ট এবং অন্যান্য আইনগত কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত