কৃষকদের মুখে আনন্দের হাসি
হারুন-অর-রশীদ : কৃষি অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। খাদ্য মানুষের পুষ্টি প্রদানের অন্যতম উপকরণ। সরকার কৃষকদের কাছে কৃষি উপকরণ সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিতকল্পে কাজ করছে। ফলে এর সুফল পাচ্ছেন কৃষক। মানুষের খাদ্য চাহিদা পূরণে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং কৃষি উপকরণ কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষে সরকার নানামুখি কাজ করছে। সূত্র জানিয়েছে, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলা নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চল। এই ৪ জেলায় ৩ বছরে ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৬৯১ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছে। এ থেকে ৫৯ লাখ ৮ হাজার ৭ মেট্রিকটন চাল উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০-২১ অর্থ বছরে আবাদ ৫লাখ ৭৬ হাজার ২৫ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮৪ মেট্রিক টন চাল। ২০২১-২২ অর্থ বছরে আবাদ করা হয়েছে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ২৫ হেক্টর। চাল উৎপাদন হয়েছে ১৯ লাখ ৪৭ হাজার ৩৮৪ মেট্রিকটন এবং ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আবাদ করা হয়েছে ৫লাখ ৮৫ হাজার ৬৪১ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ২০লাখ ২২ হাজার ৮৩৯ মেট্রিক টন চাল। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ধান এখনো মাঠে দন্ডায়মান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি বছর আবাদ ও উৎপাদন বাড়ছে। এই অঞ্চলে আউশ, রোপা আমন, বোনা আমন ও বেরো আবাদ করা হচ্ছে।
সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ায় আগ্রহী হয়ে বেশী করে জমি আবাদ করছে। ফলে উৎপাদনও বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ১লাখ ৩০হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে গম, ভুট্টা, আলু, মিষ্টি আলু, পাট, নানা প্রকার সবজি, সরিষা, চীনা বাদাম, তিসি, তিল, সূর্যমুখি, মসুর, খেসারী, মটর, শীত কালিন মুগ ও গ্রীষ্মকালীন মুগ, মাসকলাই, অড়হড়, বুট, পেঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, শতিকালিন মরিচ, গ্রীষ্মকালিন মরিচ, আদা, হলুদ, কালোজিরা, মৌরী, আখ, বাঙ্গি, মৌসুমের তরমুজ ও অফসিজনের তরমুজ আবাদ করা হয়েছে এবং ৪লাখ ১৩৭ হাজার ৯৭৬ মেট্রিকটন ফসল উৎপাদন হয়েছে। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন। স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হওয়ার পর এই অঞ্চলের কৃষি পণ্য ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার ফলে তারা লাভবান হচ্ছেন।
কৃষক সরকারি প্রণাদনা পেয়ে উৎসাহি হয়ে আবাদের দিকে ঝুকছেন। এমনকি পতিত জমিতে আবাদ করা হয়েছে। ফলে এই অঞ্চলে ঘটছে কৃষি বিপ্লব। কৃষি বান্ধব সরকার কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে। কৃষির উৎপাদন বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহন কুমার ঘোষ বলেন, কৃষক যাতে সহজে উৎপাদন বাড়তে পারে তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয়ার জন্য সরকার নানামুখি ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিন বছরের মধ্যে আমদানী নির্ভরতা কমাতে হবে। যাতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হন এবং উৎসাহ পান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী পতিত জমিতে আবাদ করা হচ্ছে। কৃষক আগ্রহী হয়ে আবাদের দিকে ঝুকছেন। তিনি কৃষকদের বেশী করে জমি আবাদ করার আহবান জানান।