রাজনৈতিক শেল্টারে আসার চেষ্টা, অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি
শেখ আব্দুল হামিদ : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহত্তর খুলনায় অশিক্ষিত কিশোর সন্ত্রাসীরা সংঘবদ্ধ হচ্ছে। উজ্জীবিত হচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গুডবুকে সক্রিয় হওয়ার জন্য বিভিন্ন কলাকৌশলে তারা দৌঁড় ঝাপ শুরু করেছে। গোয়েন্দা সংস্থা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার উঠতি বয়সী অপরাধী এবং দাগী কথিত নিষ্ক্রিয় সন্ত্রাসীদের তালিকা তৈরী করে নজরদারি বাড়িয়েছে। অনেক নিষ্ক্রিয় সন্ত্রাসীরা এখন ফের সক্রিয়। কাছে টানছে টিনএজ সন্ত্রাসীদের। আর রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশ্রয়ে লালিত কিশোর সন্ত্রাসীরা অধিকাংশই অশিক্ষিত। যাদের পারিবারিক কোন ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড নেই। নির্বাচনের হাতিয়ার হিসেবে এরা এখন মার্কেটে। ডিমান্ড হাই। অথচ বস্তিতে থাকা কিম্বা গ্রাম থেকে উঠে আসা এসব অপরাধীদের সামান্যতম অক্ষর জ্ঞান পর্যন্ত নেই। পোষাক পরিচ্ছদে বোঝারও উপায় নেই। এরা স্বশস্ত্র এবং ভয়ংকর। ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে র্যাব-পুলিশের সাথে চরমপন্থীদের বন্দুক যুদ্ধে একাধিক জলদস্যু, সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারী, মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারী নির্বাচনের পূর্ব মুহুর্তে বেশকিছু অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার হয়েছে। ধরা পড়েছে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী ও ক্যাডার। রাজপথে মার্কেটে অফিস আদালতে কিম্বা ভোট রাজনীতির মাঠে এরা সন্ত্রাসের বিষ্ফোরণ ঘটায়। এই সন্ত্রাসীদের কাছে রাজনীতিক, ডাক্তার, সাংবাদিক, আইনজীবী, জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি কোন শ্রেনী পেশার মানুষ নিরাপদ নয়।
নির্বাচন দোরগোড়ায় এগিয়ে আসায় গেল ডিসেম্বর মাসেই বেশকিছু মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর পূর্বরূপসা ঘাট এলাকা থেকে ৫ হাজার ৭৬০ পিস ইয়াবা এবং গাঁজাসহ ৬ জন র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়। ২৩ ডিসেম্বর রাতে নগরী থেকে ৪০ বোতল ফেন্সিডিল, ৮৫ পিস ইয়াবা, ৩২০ গ্রাম গাঁজা ও ১৫০ লিটার বাংলা মদ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৫ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে র্যাব পরিত্যাক্ত অবস্থায় ১৮টি ককটেল উদ্ধার করে। ২৭ ডিসেম্বর খানজাহান আলী থানা এলাকা থেকে ১৬ কেজি গাঁজাসহ স্বামী স্ত্রীকে র্যাব-৬ গ্রেফতার করে। ৩০ ডিসেম্বর বটিয়াঘাটা উপজেলার রেল ক্রসিংয়ের পাশ থেকে র্যাব-৬ আনসার আল ইসলাম এর তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট পান বাজার থেকে ককটেল ১৩ পিস, বিদেশী পিস্তল ১টি, ওয়ান স্যুটারগান ৩টি ও পিস্তলের গুলি ৫ রাউন্ড পরিত্যাক্ত অবস্থায় র্যাব-৬ উদ্ধার করে। গোয়েন্দা সূত্রমতে, খুলনা জেলায় চরমপন্থী এবং অস্ত্রধারীর সংখ্যা প্রায় ৩ শতাধিক। আর বৃহত্তর খুলনায় এর সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক।