
দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা
শেখ আব্দুল হামিদ : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো ছাপাখানাগুলোতে ব্যস্ততা বাড়েনি। এছাড়া কাগজ-কালির দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার আশানুরুপ লাভ না হওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ হবে ১৮ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা জোরেশোরে প্রচার-প্রচারণার জন্য সময় পাবেন দুই সপ্তাহের কিছুটা বেশি। প্রতীক না পেলেও দলীয় প্রার্থীরা ইতিমধ্যে পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট ছাপানোর কাজ শুরু করেছেন। তবে ব্যস্ততা নেই ছাপাখানাগুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে খুলনার ছাপাখানাগুলোতে পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। প্রচার-প্রচারণার সুবিধার্থে দলীয় প্রার্থীরাই পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজ আগেভাগে করিয়ে রাখছেন। একই সঙ্গে চলছে প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টার ডিজাইনের কাজ। তবে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কম থাকার কারণে বিগত নির্বাচনের তুলনায় পোস্টার-লিফলেট তৈরি অনেক কম বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, এখন অনলাইনে প্রচার-প্রচারণার যুগ। তাই পোস্টারনির্ভর প্রচারণা থেকে মানুষ সরে যাচ্ছে। নেতাকর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি প্রচারণা করবেন। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ থাকলে আমেজ অনেক বেশি হতো। প্রতিটি আসনের প্রার্থীরা প্রতিযোগিতা করে পোস্টার ছাপাতেন। এখন সেই অবস্থা নেই।
তারা বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি ছিল। তখন দু-তিন মাস আগে থেকেই স্টিকার, ভোটার লিস্ট, ভোটার স্লিপসহ নানা ধরনের উপকরণের কাজ ছিল। এবার এরকম কোনো অর্ডার এখনো পাওয়া যায়নি।
নগরীর দেশ প্রিন্টিং পাবলিকেশন্সের ব্যবস্থাপক এস এম শামীমুর আলম মান্দার বলেন, ‘এখনো অর্ডার পাইনি। প্রতীক বরাদ্দ হলে প্রার্থীরা আসবেন হয়তো। তবে কাগজ-কালির দাম বাড়ায় এখন খরচ বেশি, তাই লাভ হবে কম।’
সাকিব অফসেট প্রেসের মালিক এস এম সাইদ হোসেন বলেন, এখনো আমার প্রেসে নির্বাচনি কাজ শুরু হয়নি। আশা করছি, আগামী ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনি পোস্টার, লিফলেট ছাপানোর অর্ডার পাওয়া যাবে। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশগ্রহণ না করার কারণে এবং প্রার্থী কম হওয়ায় আশানুরূপ পোস্টার, লিফলেট ছাপা হবে না। তাছাড়া কাগজ, কালিসহ সব জিনিসের দাম দু-তিন গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার লাভের মুখ দেখা দূরের কথা খরচ উঠানোই কঠিন হবে।
খুলনা মুদ্রণ শিল্প সমিতির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখন বছরের প্রায় শেষ। ছাপাখানাগুলো এখন ক্যালেন্ডার, ডায়েরি, নোটবুকসহ এই ধরনের কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। তবে ইতিমধ্যে অনেক ছাপাখানা আগামী জাতীয় নির্বাচনের পোস্টার ছাপানোর কাজ শুরু করেছে। তবে এবারের নির্বাচনে আসনপ্রতি প্রার্থী কম। সে কারণে ছাপখানা পোস্টার, লিফলেট ছাপাও হবে কম। যার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে মুদ্রণ শিল্পে। ফলে আমাদের মধ্যে বেশ দুশ্চিন্তা রয়েছে।