
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনায় নগরীর ফরিদ মোল্যার মোড় থেকে এক পুলিশ সদস্যের মায়ের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ নগরীর পশ্চিম টুটপাড়ার ফরিদ মোল্যার মোড়স্থ একটি তিনতলা ভবনের দোতলার ভাড়া বাসা থেকে বুধবার দুপুরে অনিমা দাসের (৬৩) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি পুলিশ কনস্টেবল সুভেন্দু দাসের মা। মরদেহের মুখমন্ডলে শক্ত কোন বস্তুর আঘাতে থেতলে দেয়া হয়েছে। ভিকটিমের ছেলে সুভেন্দু সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় কর্মরত। তার কং নং- ৪৮১৭।
পুলিশ জানায়, অনিমা তার ৮ বছর বয়সী নাতি তীর্থ এবং মেয়ে লাভলীকে নিয়ে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। লাভলী একটি সরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন, সম্প্রতি তার রাজশাহী বদলী হয়েছে। ঘটনার রাতে অনিমা এবং তার নাতি পৃথক দুটি ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। সকালে অন্য ভাড়াটিয়ারা অনিমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে রাস্তায় পেট্রোল দেয়া পুলিশের একটি টিমকে অবহিত করেন। এর পাশাপাশি নিহতের স্বজনদের কাছ থেকেও থানা পুলিশ খবর পায়। পরবর্তীতে ওই ঘরের খাটের উপর চিৎ হয়ে পড়ে থাকা অবস্থা হতে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। বিছানার উপর জমাট বাধা রক্ত পড়েছিল।
নিহত অনিমা দাস বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা গ্রামের মৃত সুধাংশু দাসের স্ত্রী। তার ছেলে সুভেন্দু দাস নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় কনস্টেবল পদে কর্মরত।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে অনিমা দাসের বাসায় এসেছিল এক পরিচিত ব্যক্তি। ঘটনার পর থেকে সেই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। রহস্যজনক ওই ব্যক্তিকে খুঁজছে পুলিশ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম জানান, কনেস্টবল সুভেন্দুর মা অনিমা দাস তার ৮ বছরের নাতি তীর্থকে নিয়ে নগরীর টুটপাড়ার ফরিদ মোল্যার মোড়ে খান মঞ্জিলে ভাড়া থাকতেন।
বুধবার সকালে সুভেন্দুকে তার বোন ফোন করে জানায়, যে তার মা ফোন রিসিভ করছেন না। এরপর তিনি বাসায় গিয়ে মায়ের লাশ দেখতে পান। দুপুর ১টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় তার নাক-মুখ রক্তাক্ত ছিল। তবে হত্যাকাণ্ডের সময় তার নাতি ঘুমিয়ে থাকার কারণে সে কিছু টের পায়নি। অনিমা দাসের গলায় স্বর্ণের চেইন ও কানের স্বর্ণালংকার এবং আলমারিতে গহনা ছিল। সেগুলো পাওয়া যায়নি।
অনিমা দাসের স্বজনদের দেয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে অনিমা দাসের পরিচিত এক ব্যক্তি বাসায় এসেছিল। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তাকে গ্রেফতার করা গেলেই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে।
লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারি খুলনা সদর থানার এসআই ফাহামিদা আক্তার এ্যানি বলেন, লাশের মুখমন্ডলে শক্ত কোন বস্তুর আঘাতের চিহ্ন ছিল। ময়না তদন্ত শেষে বুধবার সন্ধ্যায় লাশ নিহতের ছেলে এবং পরিবারের কয়েকজন সদস্যের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে কেউ গ্রফতার হয়নি এবং থানায় মামলা নথিভুক্ত হয়নি।