
পুলিশের গুলি-লাঠিচার্জ, গুলিবিদ্ধ ৩, গ্রেফতার ১০
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ জন গুলিবিদ্ধসহ বিএনপির অন্তত ২০ জন ও ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ১০ জন বিএনপি নেতাকমীকে আটক করেছে পুলিশ।
খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে শুক্রবার বিকেলে ১০ দফা দাবিতে বিএনপির সমাবেশ শুরু হয়। এসময় নেতাকর্মীরা সেখান থেকে মিছিল বের করার চেষ্টা করে। পুলিশ তাদেরকে বাধা দিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তার ওপর বসে পড়ে। একপর্যায়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে মিছিল বের করার চেষ্টা এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে জুতা-স্যান্ডেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বেনী বাবু রোড, শামসুর রহমান রোড ও ম্যাটারনিটি হাসপাতালের সামনে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কয়েকজন নেতা প্রেসক্লাবের ভেতরে গিয়ে অবস্থান নেয়।
বিএনপি নেতারা জানান, সংঘর্ষে বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান, যুবদল নেতা জাহিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়। এছাড়া কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম মনা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কেন্দ্রীয় সমাবেশে হামলা করেছে। আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে গুরুতর রয়েছেন ১৫-২০ জন। আটক করা হয়েছে ১০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কোনো অনুমতি না নিয়েই সমাবেশ করছিল। এমনকি তারা রাস্তা আটকে জনসাধারণের ক্ষতিসাধন করে কর্মসূচি করছিল। আমরা তাদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করলেও তারা শোনেনি। তাদের নেতাকর্মীরা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশের ১০ জন সদস্য আহত হন।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ৬২ রাউন্ড রাবার বুলেট, ৫ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। ঘটনাস্থল থেকে দশজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত পূর্বনির্ধারিত বিক্ষোভ সমাবেশে বিনাউস্কানিতেই পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ এবং টিয়ারগ্যাস ও শটগানের গুলিবর্ষণ করেছে। এতে অন্তত ৩০জন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০/১২জনকে আটক করেছে পুলিশ।
বিএনপি ১০দফা বাস্তবায়নের দাবিতে শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি’র বিক্ষোভ সমাবেশ খুলনা প্রেসক্লাবের সামনে শুরু হয়। মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক এ্যাড. এসএম শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল আলম তুহিন ও জেলার সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খান।