
৭৫ শতাংশ কর্তন : চাল উৎপাদন ১১ লাখ মেট্রিক টন
হারুন-অর-রশীদ : খুলনার সবুজ মাঠে বাতাসে দুলছে বোরো ধান। গ্রীষ্ম ঋতুতে ধান পেকে সোনালী রং ধারণ করেছে। বাম্পার ফলনে কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ বেশী হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে বোরো ধান বিশেষ ভূমিকা রাখছে। নিবিড় ফসল উৎপাদন কর্মসূচির ২০২২-২৩ আওতায় রবি মৌসুমে খুলনা অঞ্চলে ২লাখ ৪৯ হাজার ৭০০ হেক্টর জমি বোরো আবাদ এবং ১০লাখ ৮৮হাজার ১১৪ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রুত গতিতে চলছে কর্তন। ৭৫শতাংশ কর্তন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে এই কর্তন কাজ। এই অঞ্চলে ব্রিধান-২৮, ৬৭,৮১,৮৮ এবং বঙ্গবন্ধু ধান (ব্রিধান-১০০) আবাদ হচ্ছে।
খুলনা কৃষি অঞ্চলে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদ করা হচ্ছে। গড়ে ফলন নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৪ মেট্রিক টন ৩৭কেজি। নতুন জাত,কলা কৌশল ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সেচ ও সার নিশ্চিত করণ, ভর্তুক্তি প্রদান, পোকা মাকড় দমন এবং আবহায়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে।
মৃত্তিকা সম্পাদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’র জিকেবিএসপি প্রকল্প থেকে সাতক্ষীরার তালা, দেবহাটা, খুলনার ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা, বাােগরহাট সদর, ফকিরহাট, কচুয়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কাশিয়ানি উপজেলায় ৬০বিঘা জমিতে ৬০টি প্রদর্শণী প্লট করা হয়েছে। হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৩৫মন ফলন হবে। বাম্পার ফলন হওয়াতে কৃষকের মুখে ফুটছে হাসি। তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছেন, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলা নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চল। এই অঞ্চলের মধ্যে খুলনা জেলায় জমি আবাদ করা হয়েছে ৬২হাজার ৮০০হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২লাখ ৮০হাজার ২২২ মেট্টিকটন। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪ মেট্রিক টন ৪১ কেজি। কর্তন হয়েছে ৪২৭৪০ হেক্টর। বাগেরহাট জেলায় জমি আবাদ করা হয়েছে ৫৯হাজার ৬৫০হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২লাখ ৭৪হাজার ৩৩৭ মেট্টিকটন। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪মেট্টিকটন ৫৯মেট্্িরকটন। কর্তন হয়েছে ৫৪০৮৫ হেক্টর। সাতক্ষীরা জেলায় জমি আবাদ করা হয়েছে ৭৭হাজার ২৫০হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩লাখ ১২হাজার ৮২৫ মেট্টিকটন। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪মেট্টিকটন ১০কেজি। কর্তন করা হয়েছে ৫৫১৭১হেক্টর এবং ড়াইল জেলায় জমি আবাদ করা হয়েছে ৫০০০০হাজার হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২লাখ ২০হাজার ৭৩০ মেট্টিকটন। প্রতি হেক্টরে ফলন ৪মেট্টিকটন ৪১কেজি কেজি। কর্তন করা হয়েছে ৩৩০৫৫ হেক্টর।
গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ভালো দামে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করছেন। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জমি পতিত ফেলে না রেখে আবাদ করা হয়েছে। সে মোতাবেক কৃষকদের ফসল ফলাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কৃষকদের কীটনাশক ও সার বিনামূল্যে এই প্রকল্প থেকে দেয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো ধানে খাদ্য উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা হয়নি। কৃষক সরকারী প্রণোদনা পেয়েছেন। তারা উৎসাহি হয়ে কৃষি কাজে এগিয়ে আসেন। তিনি পতিত জমি ফেলে না রেখে কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান।