জন্মভূমি ডেস্ক : খুলনায় ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) নগরের সার্কিট হাউস মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেয়ার আগে সোমবার বিকেল তিনটা ২৩ মিনিটে এসব প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান।
খুলনায় ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) নগরের সার্কিট হাউস মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেয়ার আগে সোমবার বিকেল তিনটা ২৩ মিনিটে এসব প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সরকারপ্রধান। এর আগে জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন উদ্বোধন হওয়া প্রকল্পগুলো তুলে ধরেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রকল্পগুলো হচ্ছে- গণপূর্ত বিভাগের রয়েছে ৮টি। সেগুলো হলো- নগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে ১৯৭১ : গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন নির্মাণ কাজ; শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন; খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন কাজ; খুলনা শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজ; খুলনায় বিএসটিআই’র ১০তলা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ভবন; বিটাক, খুলনা কেন্দ্রে ১০তলা বিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন নির্মাণ; পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক) কাজ; নগরীর দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটের ৪তলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ কাজ।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- সুন্দরবনে পরিবেশবান্ধব পর্যটন (ইকোট্যুরিজম) সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প রয়েছে ১১টি। প্রকল্পগুলো হলো- ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৫তলা অ্যাকাডেমিক কাম ৪তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন নির্মাণ কাজ; বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল; সরকারি এল বি কে ডিগ্রি মহিলা কলেজ; সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়; তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া ফাজিল মাদরাসা; নজরুলনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়; আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ৬তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ; আগড়ঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪তলা অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ এবং পাইকগাছা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের ৫-তলা একাডেমিক কাম ওয়ার্কসপ ও ৪-তলা প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকল্প হলো- ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ ।
উদ্বোধন করা হয়েছে- খুলনা সিটি করপোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণসহ রাস্তা প্রশস্তকরণ ও পুনর্নির্মাণ কাজ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ‘উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ডুমুরিয়া উপজেলাধীন বসুন্দিয়াডাঙ্গা বাজার-মাগুরখালী ইউপি অফিস (চরচরিয়া শিবনগর সড়ক) সড়কে ২৪৯০ মিঃ চেইনেজে ভরা নদীর উপর ৩১৫.৩০ মিঃ লম্বা পিসি গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজ’।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে- নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ৬তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন।
এছাড়া ৫টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তরগুলো হচ্ছে- খুলনা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় স্যানিটারী ল্যান্ড ফিল নির্মাণ, মাথাভাঙ্গা; উপজেলা পর্যায়ে ৩২৯টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন (২য় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ এর ৫ তলা একাডেমিক কাম ৪-তলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কসপ ভবন নির্মাণ কাজ।
“পল্লী সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছা উপজেলাধীন জিসি-লস্কর বাজার-বইনতলা বাজার- বগুলারচর বাজার-শুড়িখালী বাজার-ভাণ্ডারপোল বাজার-গীলাবাড়ি জিসি সড়কে ২৩০০ মিটার চেইনেজে কুরুলিয়া নদীর উপর ৭৪৮.৯০ মিটার ব্রীজ নির্মাণ কাজ।
পাইকগাছার “আকলিমা খাতুন টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ প্রকল্প এবং সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ বসন্তপুর নদী বন্দর।
এর আগে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে হেলিকপ্টারে করে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সার্কিট হাউসে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। বেলা তিনটার পর সার্কিট হাউস মাঠে দুই হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করা ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন এবং ২২৩ কোটি টাকা ব্যয়সাপেক্ষ পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে মহাসমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বক্তৃতা দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেসিসি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। মহাসমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকে খুলনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিলসহ সার্কিট হাউজ মাঠে জড়ো হন।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেয়ার জন্য সার্কিট হাউস মাঠের আবাহনী ক্রীড়াচক্র প্রান্তে তৈরি করা হয় নৌকা ও পদ্মা সেতুর আদলে ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের মঞ্চ।
পাঁচ বছর পর প্রধানমন্ত্রীর এই মহাসমাবেশ ঘিরে খুলনা পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ব্যক্তিগত সফরে খুলনা এসেছিলেন তিনি।