জন্মভূমি ডেস্ক : খুলনার পিটিআই মোড়ের স্যাংগুইন সঞ্চয় ও ঋণ দান সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান গ্রাহকের ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিরুদ্দেশ। সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পুলিশ আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সমিতির অন্যান্য কর্মচারীরা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
সমিতির পলাতক চেয়ারম্যান আহসাবুর রহমান বুলু কৌশলে টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে। রাতের অন্ধকারে বাসা ও অফিসের মালপত্র নিয়ে খুলনা ত্যাগ করেছেন বলে সর্বশেষ এলাকাসূত্রে জানা যায়।
সমিতির কর্মচারীরা বলছেন, অবিলম্বে প্রতারককে ফিরিয়ে এনে সদস্যদের সঞ্চিত অর্থ ফেরত না দিলে যেকোন সময়ে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। সমিতির কর্মচারীদের পক্ষে স্যাংগুইন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির ম্যানেজার আবু ছাত্তার সানা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি নগরীর টুটপাড়া ছোট খালপাড় এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা মৃত আনোয়ার আলী সানার ছেলে। লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, নগরীর পিটিআই মোড় এলাকায় স্যাংগুইন সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি প্রতিষ্ঠা করে গ্রাহকের কাছ থেকে অন্তত ৪ কোটি টাকা আমানত সঞ্চয় জমা নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সেখ আহসানুর রহমান বুলু। নগরীর পূর্ব বানিয়াখামার সাবেক কমিশনার গলির বাসিন্দা সেখ আহসাবর রহমান বুলুর ছেলে মেহেদী হাসান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সমিতির মাঠ পর্যায়ে ১৭ জন কর্মচারী সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয়, আমানত সংগ্রহ করতেন। গত ৪ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে সর্বশেষ চেয়ারম্যানের সাথে মোবাইলে কথা হয় ম্যানেজার আবু ছাত্তার সানার। পরদিন শনিবার কর্মদিবসে কর্মচারীরা অফিসে ঢুকতে না পেরে সমিতির চেয়ারম্যান সেখ আহসাবুর রহমান বুলুকে কল করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ পান তারা। বাসার ঠিকানায় খুঁজতে গেলে জানা যায়, বুলু রাত্রেই এলাকা ত্যাগ করেছেন। স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে গোপনে মালামাল নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ বাসা পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে গেছেন তিনি। এ অবস্থায় তার বড় ছেলে ও সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মেহেদী হাসানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কর্মচারীদের জানান, অফিসিয়াল কাজে ঢাকাতে আছেন সেখ আহসানুর রহমান বুলু। আর্থিক এ প্রতিষ্ঠানটি ফিল্ড অফিসারদের মাধ্যমে মাসিক লাভে নেয়া টাকা, সদস্যদের সঞ্চয়, আমানতকৃত অর্থ জমা রাখার বিপরীতে অন্তত প্রায় ৪ কোটি টাকা, সদস্যদের পাস বই, সকল ডকুমেন্টন্স, কর্মচারীদের আদায়কৃত ও জমাকৃত অর্থ সব কিছু কৌশলে আত্মসাৎ করে পলিয়ে গেছেন তিনি। এ অবস্থায় সদস্যদের চরম রোষানলে পড়ে চরম আতঙ্কে রয়েছেন কর্মচারীরা।
সমিতির ম্যানেজার আবু ছাত্তার সানা বলেন, কর্মচারীদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমিতির চেয়ারম্যানের ছেলে ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মেহেদী হাসানকে আটক করেছিল খুলনা সদর থানা পুলিশ। পরে অদৃশ্য কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে আদালতে একাধিক সদস্য ও কর্মচারীদের পক্ষে মামলা করা হয়েছে। সমিতির কর্মচারী মুহাম্মদ আব্দুল জব্বার বলেন, সদস্যদের অর্থ সংগ্রহ করেই সমিতির চেয়ারম্যানের নিকট জমা দিয়ে দিতাম। আমি নিজের দুই লাখ টাকাও আত্মসাৎ করেছেন আহসাবুর রহমান বুলু।
সমিতির চেয়ারম্যান সেখ আহসানুর রহমান বুলুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
খুলনা জেলা সমবায় অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়েছি। একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক অনিয়ম যাচাই বাছাইয়ের জন্য। সমিতির সদস্যরা ও কর্মচারীরা আইনের আশ্যয় নিয়েছেন বলে সর্বশেষ তিনি জানেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত