বিজ্ঞপ্তি : বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির নেতৃবৃন্দ পিপিপি’র সিদ্ধান্ত বাতিল করে সরকারি অর্থায়নে খুলনায় বিমান বন্দর নির্মাণ এবং পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ ও অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানিয়েছেন। আজ শনিবার (১৮ মে) সকালে খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উন্নয়ন কমিটির সভাপতি শেখ আশরাফ উজ জামান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বৃহত্তর খুলনার উন্নয়নে বাস্তব সম্মত পরিকল্পনা গ্রহণ এবং এ অঞ্চলের সংকট ও সম্ভাবনা চিহ্নিত করার জন্য যথাশীঘ্রসম্ভব কেসিসির মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি’র নেতৃত্বে খুলনার ০৮ জন এমপি’র সমন্বয়ে সংলাপ আয়োজন করার আহবান জানান। সংবাদ সম্মেলনে খুলনায় বিমান বন্দর নির্মাণ, পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ ও অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার দাবিতে আগামি ২১ মে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মোংলা বন্দরকে গতিশীল করা এবং সুন্দরবনের পর্যটন শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা মাথায় রেখে ১৯৯৬ সালে ২৭ জানুয়ারি রামপাল উপজেলার মোংলা মহাসড়কের পাশে হযরত খানজাহান আলী(রহ:) বিমান বন্দরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ৪৪ হেক্টর জমিতে আংশিক মাটি ভরাটের কাজ দিয়ে শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আরও ১৫০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করে টাকা পরিশোধ করা হয়। সর্বমোট ১৯৪ হেক্টর জমি বিমান বন্দরের জন্য নির্ধারিত থাকলেও খুলনা বিভাগীয় শহর হিসেবে গত ২৭-২৮ বছরেও এই বিমান বন্দর চালু করা সম্ভব হয়নি। নেতৃবৃন্দ বলেন পদ্মা সেতু নির্মাণের পরে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে দ্রæততম সময়ে বিনিয়োগকারীদের যাতায়াতের জন্য বিমান বন্দর চালু করা এখন সময়ের দাবি। এই বিমান বন্দর নির্মাণে পিপিপি’র সিদ্ধান্ত বাতিল করে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বিমান বন্দর নির্মাণ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে ঘিরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে তা কাজে লাগাতে অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন। আমরা মনে করি পদ্মা সেতু ভিশন-২০৪১ অর্জনে মাইল ফলক হিসেবে কাজ করবে। রূপসা-ভৈরব বিধৌত পলি মটিতে গড়ে উঠেছে খুলনা শহর। উপকুলের বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ এ জেলায় রয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আবাসভূমি। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের আঁচল জুড়ে গড়ে উঠেছে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্র বন্দর মোংলা। খুলনার প্রাকৃতিক এবং ভ‚-রাজনীতির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে সড়ক, রেল, নৌ এবং সমুদ্র পথে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সাথে বাণিজ্যিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সম্ভব। এই সমুদ্র বন্দর ও সুন্দরবনকে আবর্তিত করেই সমৃদ্ধ হচ্ছে খুলনা উপকূলের অর্থনীতি। যে জন্য খুলনা এবং মোংলা অর্থনীতির হাব বা কেন্দ্র হিসেবে ভ‚মিকা রাখতে পারে।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় পদ্মা সেতুর ইতিবাচক প্রভাব আর্থ-সামাজিক ও আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। এখন প্রয়োজন ক্ষেত্র চিহ্নিত করে বিনিয়োগের অনুক‚ল পরিবেশ সৃষ্টি করা। মোংলা বন্দরের সুবিধা বৃদ্ধি, পর্যটন ও কৃষি সেক্টরসহ সম্ভাবনার সকল দিকে এ অঞ্চলের মানুষের এখন ভাবনার বিষয়। বাস্তব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব মোকাবেলায় দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টিতে কারিগরি শিক্ষায় যোগ্য এবং দক্ষতাসম্পন্ন জনবল তৈরি এখন সময়ের দাবি। এর মধ্যদিয়ে খুলনার উন্নয়নে কৃষি-শিল্প-পর্যটনসহ বিভিন্ন সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মোঃ মনিরুজ্জামান রহিম, সহ-সভাপতি শাহীন জামাল পন, অধ্যাপক মোঃ আবুল বাসার, জোবায়ের আহমদ খান জবা, সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শেখ মোশাররফ হোসেন, খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, শেখ আবু হাসান,নারী নেত্রী অধ্যক্ষ রেহানা আখতার, সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, মীর বরকত আলী, অর্থ সম্পাদক মিনা আজিজুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মফিদুল ইসলাম টুটুল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোল্লা মারুফ রশীদ, মহিলা সম্পাদক রসু আক্তার, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সরদার রবিউল ইসলাম রবি, কৃষি সম্পাদক রকিব উদ্দিন ফারাজী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হায়দার আলী, মোঃ আনিসুজ্জামান, বিশ্বাস জাফর আহমেদ, জি এম রেজাউল ইসলাম, মোঃ সফিকুর রহমান এবং প্রমিতি দফাদার প্রমুখ।