শেখ আব্দুল হামিদ
খুলনায় করোনা মহামারীর দাপট কমে এসেছে। পাঁচ কোভিড হাসপাতালে মোট ৫৬৫ শয্যার ৩৬৭টি ফাঁকা পড়ে আছে। আক্রান্ত রোগির বেশীরভাগই বাড়ি বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কোভিড-১৯ এর তৃতীয় ঢেউ শুরু হলে এসব হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। জুলাই মাসের পর আগষ্টে সরকারি বেসরকারি সব হাসপাতালেই রোগি ভর্তির সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। তবে করোনা রোগি ভর্তি থাকা এসব শয্যায় কোন সাধারণ রোগিকেও ভর্তি করা হচ্ছে না। এসব শয্যা সাধরণরোগিদের জন্য ব্যবহার করা যাবে কিনা এবিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি এখনও গ্রহণ করেনি। গত ২৪ ঘন্টায় ৫৬৬টি নমুনা পরীক্ষায় ১২৭ জনের দেহে করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। এসময়ে পাঁচ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের।
খুলনা জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০ শয্যার ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে গত ১৭ জুলাই পর্যন্ত রোগি ভর্তি আছে ১০১ জন। এখানে ৯৯টি বেড ফাঁকা পড়ে রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: রবিউল হাসান বলেন, করোনা রোগিদের ব্যবহারের জন্য এসব শয্যা প্রস্তুত করা হয়। এখানে রয়ে অক্্িরজেন ব্যবস্থা, আইসিইউ, এইচইউডিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম। সাধারণ রোগি রাখার জন্য উপযোগি নয়। তাছাড়া করোনা পরিস্থিতি আরও কিছিদিন পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন রয়েছে। জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বেসরকারি খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য মোট ৯০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়। এখানে গতকাল পর্যন্ত রোগি ভর্তি রয়েছে ৪৩ জন। হাসপাতালে ৪৭টি বেড ফাঁকা পড়ে আছে। পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তারা এখানেও সাধারণ রোগি ভর্তি করছেন না।
শেখ আবু নাসের বিশেষায়ীত হাসপাতালে করোনা রোগি চিকিৎসার জন্য মোট ৪৫টি বেড প্রস্তুত করা হয়। এ হাসপাতালে গতকাল পর্যন্ত করোনা রোগি ভর্তি আছে ২৫ জন। রোগি শুন্য অবস্থায় বেড পড়ে আছে ২০টি। এখানেও পরবর্তী নির্দেশনার জন্য শয্যা গুলো ফাঁকা রাখা হয়েছে।
খুলনার বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা রোগিদের জন্য মোট ১৫০টি শয্যা প্রস্তুত করা হয়। রোগি ভর্তির সংখ্যা কমে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত ভর্তি আছে মাত্র ২২ জন। এখানে ১২৮টি বেড ফাঁকা রয়েছে। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে করোনার যদি উর্ধগতি হয় তখন এসব বেডে রোগি রাখা হবে।
খুলনা জেলা সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদ দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, করোনা পরিস্থিতি দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। যদিও করোনার এখন নি¤œগতি দেখা যাচ্ছে। আক্রান্ত রোগিদের বেশীর ভাগই বাড়ি বসে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তবুও বিভিন্ন হাসপাতালের ফাঁকা বেড গুলোতে সাধারণ রোগি রাখার সময় আসেনি। তিনি বলেন বিষয়টি খুলনা জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতিকে অবগত করা হবে। তিনি সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিবেন।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গার অমল রায় (৬৮), নাহিদ নিয়াজি (৩০), আড়ংঘাটার ফাতেমা (৬৫), বাগেরহাটের ফকিরহাটের ওলিয়ার রহমান (৫৫), রামপালের জাহানারা বেগম (৬০) ও নড়াইলের কালিয়ার ইবাদত শেখ (৫৫)। খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর ছোট বয়রা ডক্টরপাড়ার ইমদাদুল ইসলাম (৬৫) নামের এক রোগির মৃত্যু হয়। বাকী হাসপাতাল গুলোতে কার মৃত্যু হয়নি।
খুলনার পাঁচ কোভিড হাসপাতালে ৩৬৭ বেড ফাঁকা
Leave a comment