
জন্মভূমি রিপোর্ট : পাঁচ শতাধিক পশু নিয়ে খুলনার প্রত্যন্ত গ্রামে বসেছে কোরবানীর হাট। গ্রামের বিত্তবান লোকেরা ছাড়াও শহর থেকে যেয়ে গরু কেনার জন্য এখানে বহুজন ভিড় করছেন। বিভিন্ন গ্রামের বাড়িতে বছর জুড়ে চলে পশু পালন। মোটাতাজা করে এখন তারা গ্রামের এ হাটে তুলছেন। বছর শেষে তৃণমূলের মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকেরা মোটা অংকের টাকা নিয়ে এখন ঘরে ফিরছেন। অনেকের সাথে কথা বলে জানাযায়, গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেবেন। কেউ আবার ছেলের পড়ার খরচ মেটাবেন। আবার কেউ চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন। এমন সব আশা নিয়ে পশু লালন-পালন করে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোট ইউনিয়নের বহু পরিবার এখন স্বাবলম্বী।
শুক্রবার বটিয়াঘাটা উপজেলার ভান্ডারকোট ফুটবল মাঠে সকাল থেকে বসতে শুরু করে পশুর হাট। হাটে গরু, ছাগল, ভেড়াসহ বিভিন্ন পশু উঠতে দেখা যায়। দুপুরের পরেই বিশাল মাঠ পশু আর ক্রেতার ভিড়ে ভরে ওঠে। শহর থেকে বিত্তবান লোকেরা গাড়ি নিয়ে চলে যান সেই নিঝুম গ্রামে গরু কেনার আশায়। দেশী প্রজাতীর গরু স্বাভাবিক খাবার খেয়ে তারা বিক্রয় উপযোগী হয়ে ওঠে। মূল্যও অনেকটা কম। কোরবানী দেয়ার জন্য মানুষের ঝোঁক সেদিকেই। পশুর হাট ছাড়াও বহু বাড়িতে মানুষ যাচ্ছে গরু কিনতে। অনেকেই একাধিক পশু লালন-পালন করেন। কেউ আবার বাণিজ্যিক আকারে ফার্ম গড়ে তুলেছেন। গরু হাটে তুলে আবার বাড়িতে নিয়ে রাখেন। ক্রেতারা খরচ কমাতে গরু কিনে মালিকের বাড়িতেই রেখে দেন। ঈদের আগের দিন অথবা কোরবানীর দিন নিয়ে আসেন।
কথা হয় গরুর মালিক হান্নান ঢালীর সাথে। তিনি জানান বাড়ির সাধারণ খাবার এবং বিলের ঘাষ খাইয়ে তিনি গরু লালন-পালন করেছেন। প্রায় তিন মন ওজন হয়েছে তার গরুর। তিনি দাম চাইছেন এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা। ক্রেতারা একলাখ বিশ হাজার টাকা বলেছে। তবুও দেয়া হয়নি। তিনি জানান, বিক্রি করে কিছু সংসারের খরচ মেটাবেন এবং অন্য একটা গরু কিনে লালন-পালন করবেন।
পাশের গোয়ালঘাটা গ্রাম থেকে গরু নিয়ে এসেছেন এরশাদ আলী। তিনি বলেন, তার বাড়িতে ৮টি গরু নিয়ে ছোট আকারের একটি ফার্ম করা হয়েছে। অধিকাংশ গরু এখন মোটাতাজা। তিনি লাল রংয়ের একটি গরুর দাম চাইলেন একলাখ পঞ্চান্ন হাজার টাকা। একলাখ চল্লিশ হাজার টাকা হলে বিক্রি দিবেন। এভাবেই বহু গ্রামের মানুষ হাটে গরু তুলেছেন।
গরু কিনতে আশা আলম হালদার জানান, হাটে প্রচুর গরু উঠেছে। তবে দাম অনেক বাড়তি। তাই অপেক্ষা করছি আগামী মঙ্গলবার হাটে গরু কেনার জন্য। এখানে প্রতি শুক্র এবং মঙ্গলবার গরুর হাট বসে।